রামেক-মমেক ও খুলনা-সিলেট বিভাগে ৯৭ মৃত্যু

প্রকাশ | ২৮ জুলাই ২০২১, ১৩:৩৪ | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২১, ১৩:৫১

নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকাটাইমস

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের দুই বিভাগ ও দুই হাসপাতালে করোনাভাইরাস ও উপসর্গে ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা বিভাগে মারা গেছেন ৩১ জন। আর সিলেট বিভাগে ১৭ জন মারা গেছেন, যা এক দিনে সর্বোচ্চ। 

এছাড়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন ১২ জন। আর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) মারা গেছেন ১৮ জন। রাজশাহী বিভাগের মধ্যে শুধু বগুড়া জেলায় পৃথকভাবে মারা গেছেন ১৯ জন।

বুধবার স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনায় জেলায়। বাকিদের মধ্যে যশোরে ৬ জন, কুষ্টিয়ায় ৫ জন, ঝিনাইদহে ৪ জন, মাগুরায় ৩ জন, চুয়াডাঙ্গায় ২ জন, বাগেরহাট ও মেহেরপুরে একজন করে মারা গেছেন।

খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে আজ সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০টি জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৯০ হাজার ৫৪৯ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ২৯৪ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৫ হাজার ৪৬১ জন। 

সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের কোভিড-১৯ কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনের দৈনিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সিলেট বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৭০ নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ৭৩৬ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এটি সিলেট বিভাগে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ সময়ে মারা গেছেন আরও ১৭ জন। এটি সিলেটের সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগে ২৬ জুলাই সিলেট বিভাগে সর্বোচ্চ ১৪ জনের মৃত্যু হয়।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, হাসপাতালের করোনা ইউনিটের বিভিন্ন ওয়ার্ডে করোনায় ছয়জন ও উপসর্গে ১২ জন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ ও চারজন নারী। এদের মধ্যে রাজশাহীর ছয়জন, নাটোরের তিনজন, পাবনার সাতজন, কুষ্টিয়ার মেহেরপুরের একজন করে রয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজশাহীর দুইজন, নাটোরের একজন, পাবনার দুইজন ও কুষ্টিয়ার একজন মার গেছেন। অন্যদিকে উপসর্গ নিয়ে রাজশাহীর চারজন, নাটোরের দুইজন, পাবনার পাঁচজন ও মেহেরপুরের একজন মারা যান। মৃতদের পরিবারকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় রামেকে নতুন ভর্তি হয়েছেন ৫০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৯ জন। রামেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৮৩ জন ও উপসর্গ নিয়ে ২২০ জন ভর্তি রয়েছেন।’

এছাড়া পৃথকভাবে শুধু বগুড়া জেলাতে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা ও উপসর্গে। জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, করোনায় মৃতরা হলেন- বগুড়া সদরের মাহফুজুর রহমান (৬৯), গৌরী পাল (৭০), রুনা হক (৫২), সুফিয়া খানম (৭০) ও অজিয়ার রহমান (৫৫) এবং শাজাহানপুরের আবুল কালাম আজাদ (৬৫)। অপরদিকে করোনা উপসর্গে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারজন ও মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে ৯ জন মারা গেছেন।

এদিকে ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১২ জন। ইউনিটের মুখপাত্র ডা. মহিউদ্দিন খান মুন জানান, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজন করোনায় এবং সাতজন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। 

তিনি জানান, করোনায় মৃতরা হলেন- ময়মনসিংহ সদরের আমজাদ হোসাইন (৪২), আব্দুর রব (৭২), খোদেজা বেগম (৬০), তারাকান্দার খাদিজা খাতুন (৪৩) ও নেত্রকোনা সদরের নুরুল হক (৮০)।

এ ছাড়া ওই সময়ের মধ্যে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান ময়মনসিংহ সদরের নিলিমা বিশ্বাস (৬২), ফিরোজা বেগম (৬০), মিহিরকান্তী সান্যাল (৬৬), সেতু জামান (৫৮), ফিরোজা বেগম (৬০), হালুয়াঘাট উপজেলার আলতাফ হোসেন (৬৫) ও জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার আক্কাস আলী (৭৪)। 

হাসপাতালের করোনা ইউনিটে বর্তমানে ৪৪৫ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ২১ জন রোগী। নতুন ভর্তি হয়েছেন ৬৭ জন ও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৯ জন। 

(ঢাকাটাইমস/২৮জুলাই/ইএস)