সোয়া কোটি পার, জোরদার হচ্ছে টিকাদান কার্যক্রম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২১, ২২:৪৩ | প্রকাশিত : ২৮ জুলাই ২০২১, ২২:৩৭
ফাইল ছবি

মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে অব্যাহত আছে টিকাদান কর্মসূচিও। ইতিমধ্যে সোয়া এক কোটির বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে চায়। এজন্য জোরদার করা হচ্ছে টিকাদান কর্মসূচি। টিকা পাওয়ার প্রক্রিয়াও সহজ করা হচ্ছে। আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে শুরু হবে টিকাদান। তখন প্রতি মাসে এক কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনার টার্গেট নিয়েছে সরকার।

বুধবার রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ পর্যন্ত দেশের এক কোটি ২৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৯ জন মানুষ করোনা টিকার আওতায় এসেছে। এদের মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৮২ লাখ ৭০ হাজার ৪২২ এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪৩ লাখ ২২ হাজার ৩২৭ জন।

প্রথম ডোজ টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে পুরুষ ৫০ লাখ ৪৮ হাজার ১৭২ জন এবং নারী ৩২ লাখ ২২ হাজার ২৫০ জন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে পুরুষ ২৭ লাখ ৫৭ হাজার ২৩৭ জন এবং নারী ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯০ জন।

এরমধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড নিয়েছেন দেশের এক কোটি এক লাখ ১৮ হাজার ১১৯ জন মানুষ। চীনের সিনোফার্মের টিকা নিয়েছেন ১৮ লাখ ৭৮ হাজার ৬৫৪ জন। ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা নিয়েছেন ৫০ হাজার ৫২৩ জন। আর মডার্নার টিকা নিয়েছেন পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫৩ জন।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে পুরুষ ৬৩ লাখ ৫৪ হাজার ৮৭১ জন এবং নারী ৩৭ লাখ ৬৩ হাজার ২৪৮ জন। এই টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে ৪২ লাখ ৯৮ হাজার ৮৬ জন দ্বিতীয় ডোজ এবং ৫৮ লাখ ২০ হাজার ৩৩ জন প্রথম ডোজ নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণকারী পুরুষ ২৭ লাখ ৪৫ হাজার ৭৯২ এবং নারী ১৫ লাখ ৫২ হাজার ২৯৪ জন। আর প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণকারী ৩৬ লাখ ৯ হাজার ৭৯ জন পুরুষ এবং নারী ২২ লাখ ১০ হাজার ৯৫৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, আজ বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এক কোটি ৩৪ লাখ ৭১ হাজার ১২৭ জন করোনা টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন।

জোরদার হচ্ছে টিকাদান কর্মসূচি

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চেষ্টা করেও করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না সরকার। মৃত্যু ও শনাক্ত উভয়টি নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে। প্রকোপ ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধ চলমান থাকলেও তাতে থামছে না মৃত্যুর মিছিল। শনাক্তের সংখ্যা ও হার বেশ উদ্বেগজনক। এই অবস্থায় বেশির ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসাই সবচেয়ে কার্যকরী উপায় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা এ ব্যাপারে সরকারকে পরামর্শও দিয়েছেন।

ইতিমধ্যে টিকা কার্যক্রম জোরদারের জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। মাঝে টিকার সংকটে এই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলেও এবার বিভিন্ন উৎস থেকে টিকা সংগ্রহ করছে সরকার। টিকার সংকটে এই কার্যক্রম আর বন্ধ হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মঙ্গলবার একটি অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, সবাই যেন টিকা পায় সেই ব্যবস্থা করছে সরকার। টিকার নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়েই টিকা নেওয়া যাবে। এছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী টিকাদান কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে আরোপিত বিধিনিষেধের কার্যক্রম পর্যালোচনা ও কোভিড-১৯ প্রতিরোধক টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা নিয়ে মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, দেশব্যাপী করোনার গণটিকা কর্মসূচি জোরদার করতে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এলক্ষ্যে আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে। এ কার্যক্রম চালাতে ইউনিয়ন পরিষদে কেন্দ্র তৈরি করে টিকা দেওয়া হবে। শহরাঞ্চলে মডার্নার আর গ্রামাঞ্চলে দেওয়া হবে সিনোফার্মের টিকা।

গণটিকাদান কার্যক্রমের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, টিকা দেওয়ার বিষয়ে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। সে কারণে আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদে টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করছি। যেখান থেকে ইউনিয়নের সব লোকজন, আপামর জনসাধারণ যারা টিকা নিতে চায় বা যাদের নিতে হবে তারা টিকা নিতে পারবেন। তারা এনআইডি কার্ড নিয়ে আসলেই টিকা নিতে পারবেন।

জাহিদ মালেক বলেন, পঞ্চাশোর্ধ নারী ও পুরুষ বেশি সংক্রমিত হচ্ছে। ঢাকা শহরের হাসপাতালে যারা ভর্তি আছেন তাদের ৭৫ শতাংশ পঞ্চাশোর্ধ এবং তাদের ৯০ শতাংশ টিকা নেয়নি। তাদের মধ্যে মৃত্যুহারও বেশি। এ কারণে পঞ্চাশোর্ধ নারী-পুরুষদের টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যারা পঞ্চাশোর্ধ তারা যেন তাড়াতাড়ি ইউনিয়ন পর্যায়ে এসে টিকা নিতে পারেন, আমরা সেদিকে জোর দিচ্ছি। টিকা আরও বেশি যখন হাতে আসবে তখন আমরা আরও নিচে যেতে পারব। অর্থাৎ ওয়ার্ড পর্যায়ে আমরা চিন্তা-ভাবনাই রেখেছি।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই টিকার প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়। কিন্তু দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে সংকটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর চীন থেকে টিকা কেনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়। চীনের উপহার হিসেবে পাঠানো এবং কেনা টিকা মিলিয়ে মোট ৫১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে। এর বাইরে কোভ্যাক্স থেকে ছয কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে ফাইজার-বায়োএনকেটের তৈরি এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এবং মডার্নার তৈরি ৫৫ লাখ ডোজ ইতিমধ্যে দেশে এসেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সম্প্রতি জানিয়েছেন, আগামী মাসের মধ্যেই আরও দুই কোটি ডোজ টিকা দেশে চলে আসবে। আগামী বছরে ২১ কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে।

(ঢাকাটাইমস/২৮জুলাই/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি শুরু

ঢাকায় কর দিয়ে ২৬৮০ বিয়ে 

সংরক্ষিত আসনের এমপিদের মধ্যেও সংখ্যায় এগিয়ে ব্যবসায়ীরা: সুজন

মানবাধিকার ও ভোক্তা অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা জরুরি: ড. কামাল উদ্দিন

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে রেলকে গড়ে তুলতে হবে: রেলমন্ত্রী

ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

জিম্মি নাবিকদের মুক্তির আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিএনসিসি কার্যালয় সরানোর মধ্য দিয়ে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু 

বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন দীন মোহাম্মদ, বললেন ‘কোনো অন্যায় আবদার শুনব না’

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :