টিকার প্রভাব তিন মাসেই কমে যেতে পারে!

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ১২:১৮ | প্রকাশিত : ২৯ জুলাই ২০২১, ১২:১০

করোনাভাইরাস পৃথিবীতে ১২৪টি দেশ ও অঞ্চলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। আধিপত্য বিস্তার করেছে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ‘ডেল্টা’। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজুক অবস্থার জন্য করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটিকে (বি.১.৬১৭.২) দায়ী করা হচ্ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও ডেল্টা ধরনটিকে ‘বিশ্বের জন্য উদ্বেগজনক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য টিকাদান কার্যক্রম খুবই জোরেসোরে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিটি দেশে। করোনাভাইরাস ও এর টিকা নিয়ে এখনও বহু কিছুই বিজ্ঞানীদের অজানা। কোন টিকা কত দিন সুরক্ষা দেবে, সে ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন। এসব অনিশ্চয়তা থেকে সন্দেহ তৈরি হয়। তাই ভয় কাটছে না রোগটি সম্পর্কে।

করোনা আটকাতে কোন টিকা নেবেন, তা নিয়ে এখনও সংশয়ে রয়েছেন বহু মানুষ। অনেকেরই প্রশ্ন, কোন করোনা টিকার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। এরই মধ্যে উঠে এলো এমন এক তথ্য, যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিজ্ঞানীদের। ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ক্ষমতা অনেকের শরীরেই দ্রুত কমে যাচ্ছে। এমনই বলছে একটি গবেষণার ফল।

সম্প্রতি ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’-এর পক্ষে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। কোন টিকার অ্যান্টিবডি শরীরে কত দিন থাকছে, তা পরীক্ষা করে দেখেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। দেখা গেছে, ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুইটি করে টিকা নেওয়ার পরে ছয় সপ্তাহের মাথায় এসে অ্যান্টিবডির পরিমাণ কমতে শুরু করে। ১০ সপ্তাহের মাথায় এসে অনেকের ক্ষেত্রেই তা নেমে আসে ৫০ শতাংশে।

‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’-এর গবেষণাপত্রটি ‘ল্যানসেট’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবীকে নিয়ে এই সমীক্ষাটি চালানো হয়। সেই দলে নানা বয়সের স্বেচ্ছাসেবীরা ছিলেন। ছিলেন কোনও অসুস্থতার লক্ষণ না থাকা মানুষ, আবার নানা ধরনের অসুখে ভুগছেন এমন মানুষও। কমবেশি সকলের ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবডির পরিমাণ দ্রুত কমেছে। এমনটাই দেখিয়েছে সমীক্ষাটি।

বিজ্ঞানীরা বলেছেন, যেহেতু মাত্র ৬০০ জনকে নিয়ে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে, তাই এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। আরও বেশি মাত্রায় মানুষের অ্যান্টিবডির পরীক্ষা করে ভবিষ্যতে এর উত্তর পাওয়া যাবে।

রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিখুঁতভাবে কার্যকর করে তোলার জন্য বিজ্ঞানীরা বুস্টার ডোজের কথা ভাবছেন। দেখা গেছে, হাম, মাম্পস বা রুবেলার মতো ভয়াবহ রোগ প্রতিরোধে যে শিশুরা বুস্টার ডোজ নিয়েছে, তাদের ৯৬ শতাংশই পূর্ণ নিরাপদ।

সাধারণত টিকা দেওয়ার পর দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রথমে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধরনের শ্বেত কণিকা (হোয়াইট ব্লাড সেল) সক্রিয় করে তোলে। প্রথমত প্লাজমা বি সেলকে সক্রিয় করে। কিন্তু এই সেলগুলো বেশি দিন টিকে থাকে না। ফলে যদিও টিকা নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, এরপর বুস্টার ডোজ গ্রহণ না করলে অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা দ্রুত কমে যায়। অবশ্য ভ্যাকসিনে রক্তের টি সেলও উজ্জীবিত হয়। এরা নির্দিষ্ট প্যাথোজেন চিহ্নিত করে তাকে নিষ্ক্রিয় করে। তবে বুস্টার ডোজ ছাড়া এ ধরনের টি সেল খুব বেশি থাকে না। তাই টিকার প্রভাব কমে গেলে বুস্টার ডোজ নিয়ে গবেষণা চলছে।

সূত্র: আনন্দবাজার

(ঢাকাটাইমস/২৯জুলাই/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :