কাজ করতে হলে দিতে হতো চাঁদা, না পেলেই গুলি

প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০২১, ১৫:৫২ | আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২১, ১৬:৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তারা চুক্তিতে কিলিং মিশিনে অংশ নিত। পাশাপাশি রাজধানীতে রাস্তা, ভবন নির্মাণ ও মাটি ভরাটসহ বিভিন্ন কাজ করতে গেলেই ঠিকাদারদের কাছে চাওয়া হতো মোটা অঙ্কের চাঁদা। চাহিদামতো চাঁদা না দিলে ঠিকাদারকে গুলি করে ঢাকার বাইরে পালিয়ে যেত চক্রের সদস্যরা। 

সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ ডিএমপির ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় চাঁদা না পেয়ে আরব আলী নামে এক ঠিকাদারের পায়ে গুলি করে চক্রটি। এ ঘটনায় চক্রটির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন ওই ঠিকাদার। এরপর বুধবার চক্রের তিন সদস্যকে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের গুলশান বিভাগের একটি টিম।

এরা হলো, শাহজাহান ওরফে সাবু, দুলাল প্যাদা ওরফে জিএমপি দুলাল ও সাইফুল ইসলাম ওরফে সুজন। তাদের কাছ থেকে একটি রিভলবার, একটি পিস্তল ও তিন হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

হাফিজ আক্তার বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থানার মামলার বাদী মো.আরব আলী পেশায় একজন ঠিকাদার। গত ১৫ মার্চ বাদীর এলাকার লোকজন নিজেরা অর্থ সংগ্রহ করে এলাকার ৮০ ফুট প্রশস্ত সুয়ারেজ ড্রেনের কাজের জন্য তাকে দায়িত্ব দেয়। কাজ চলাকালে গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন সময় বাদীর কাছে চাঁদা দাবি করে হুমকি দিয়ে আসছিল। আরব আলী চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ৩০ মার্চ দুপুরে ক্যান্টনমেন্ট থানার ৩৩/এ বাসার সামনের রাস্তায় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে। এ সময় আরব আলীর ডান পায়ের উরুতে গুলিবিদ্ধ হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। 

তিনি বলেন, এরপর ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ভিডিও পর্যালোচনা ও প্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত শাহাজাহান ওরফে সাবুকে চাঁদপুরের হাইমচর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে পল্লবী থানার কালশী বাউনিয়া বাঁধের বাসা থেকে ৬ চেম্বার বিশিষ্ট একটি রিভলবার ও এক হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে কালশী এলাকা থেকে দুলাল প্যাদা ও জিএমপি দুলাল ও সাইফুল ইসলাম ওরফে সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও দুই হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।

অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা বিভিন্ন সময় চুক্তির মাধ্যমে কিলিং মিশিনে অংশগ্রহণ করতো। এছাড়াও তারা মাদক ব্যবসা ও ভাষানটেক, কালশী, ক্যান্টনমেন্ট, মাটিকাটা এলাকায় চাঁদাবাজি ও প্রভাব বিস্তারের জন্য অস্ত্র ব্যবহার করতো। 

এদের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিনটি মামলা হয়েছে বলে গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান। 

(ঢাকাটাইমস/২৯জুলাই/এআর/কেআর)