কাজ নেই অর্থও নেই, বন্যা মোকাবিলায় শ্রমজীবীরা চিন্তায়

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ১৭:৫৬ | প্রকাশিত : ২৯ জুলাই ২০২১, ১৭:৪৫

প্রতিবছর বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্ততি নিয়ে থাকে কুড়িগ্রামের নদ-নদী তীরবর্তী মানুষ। কিন্তু এবার করোনা করোনা পরিস্থিতি আর লকডাউনের কারণে শ্রমজীবী মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। কাজ নেই, জমানো অর্থও শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সেভাবে নিতে পারছে না বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি। এ নিয়ে শ্রমজীবীদের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। তবে, জেলা প্রশাসন বলছে বন্যা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি তাদের রয়েছে।

১৬টি নদ-নদীময় কুড়িগ্রাম জেলায় রয়েছে ৩১৬ কিলোমিটার নদী পথ। প্রতিবছর ভারী বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ী ঢলের কারণে এ জেলায় বন্যা হয়। এতে জেলার প্রায় ৪-৫ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে যায়। এছাড়াও রয়েছে আগ্রাসী নদীভাঙন। প্রতিবছর বন্যার আগে লোকজন আগাম প্রস্ততি নেয়। ঘরবাড়ী মজবুত করে। আলগা চুলা, ওষুধপত্র, শুকনো খাবার ও জ্বালানী সংগ্রহ করে। পর্যাপ্ত চাল-ডাল ঘরে রাখে। কিন্তু এবার অতিমারী করোনা আর লকডাউনের কারণে বেশিরভাগ শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষকে ঘরে বন্দি থাকতে হচ্ছে। ফলে কাজ না থাকায় উপার্জনও কমে গেছে। এর ফলে হাতে টাকা-পয়সা না থাকায় আগাম প্রস্তুতির কাজে হাত দিতে পারছে না তারা।

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের শেখ পালানু গ্রামের আবুল হোসেন, আশরাফ আলী ও মমেনা বেগম বলেন, লকডাউনের কারণে ঢাকায় কাজ করতে যেতে পারি নাই। এর আগে যা টাকা উপার্জন করেছি, তাই দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালাচ্ছি। এখন বন্যার জন্য ঘরবাড়ি মেরামত করাতে গেলে না খেয়ে থাকতে হবে।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরফারাজী পাড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার আশরাফুল, আবুল হোসেন, বক্কর ও মজিবর বলেন, আমরা করোনা, নদীভাঙন আর লকডাউনের কারণে খুব খারাপ অবস্থায় আছি। গত বন্যায় বাড়িঘর দুর্বল হয়ে গেছে। বেড়াগুলা ঠিক করা দরকার, কিন্তু টাকা খরচ করতে ভয় হচ্ছে। যদি লকডাউন শেষ না হয়, তাহলে আমাদের ভীষণ বিপদের মধ্যে পড়তে হবে।

এই ইউনিয়নের মেম্বার রিপন মিয়া জানান, এবার অনেকের ডিঙি নৌকাও শুকনো জায়গায় পরে আছে। মেরামত করার অর্থ নেই। ফলে বন্যায় পারাপারেও খুব সমস্যা হবে।

বেসরকারি এনজিও কর্মী আব্দুল মালেক জানান, এবার লোকজন আগাম প্রস্ততি নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। কারণ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা লকডাউনের কারণে বেসরকারি সংগঠনগুলোর কার্যক্রম থমকে গেছে। এই সময়টিতে তারা চরাঞ্চলের মানুষদের জন্য সচেতনতামূলক নানান কার্যক্রম হাতে নেয়। বর্তমানে সব ধরণের কার্যাদি বন্ধ থাকায় এসব বন্যা কবলিত মানুষের জন্য কোনো সহযোগিতা পৌঁছাচ্ছে না।

এ বিষয়ে উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে এবার বন্যা মোকাবিলা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে উত্তরের এই জনপদে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দিক নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি সরকারি সহায়তা পৌঁছে দেয়া শুরু হয়েছে।

তবে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, বন্যা মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের সার্বিক দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত নৌকা ও আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও বন্যা কবলিতদের জন্য পর্যাপ্ত চাল, নগদ অর্থ উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ফলে এর প্রভাব তেমনটা পরবে না।

(ঢাকাটাইমস/২৯জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :