‘জীবিত’ পরিচয় পেতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে শিল্পী সুজিত

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ জুলাই ২০২১, ২১:২২

তবলায় গানের তাল তুলে আসর মাতিয়ে রাখেন সুজিত চন্দ্র সরকার (৫৩)। এতে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে কষ্টের সংসার। দেড় বছর ধরে দেশে করোনা মহামারি ও চলমান লকডাউনে আয়ের সেই পথও বন্ধ।

তিন মাস আগে ব্যাংকে করোনা প্রণোদনার একটি চেক ভাঙাতে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফিকেশনে সুজিত চন্দ্র সরকার জানতে পারেন- তিনি মৃত! আর এ কারণে ভোটার তালিকা থেকে তার নাম কেটে দেয়া হয়েছে। সেই থেকে কাগজে-কলমে মৃত থেকে জীবিত হতে উপজেলা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তবলা শিল্পী সুজিত চন্দ্র সরকার।

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ২ নম্বর কাটলা ইউনিয়নের দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর গ্রামের অভিনাশ চন্দ্র সরকারের ছেলে সুজিত চন্দ্র সরকার। ভোটার তালিকায় তার পরিচয় ‘মৃত’ হিসেবে থাকায় তিনি পড়েছেন বিপাকে। আর এ নিয়ে পদে পদে হচ্ছেন ভোগান্তির শিকার। ভোটার তালিকায় তার নাম বহাল ও ডাটাবেইজ স্ট্যাটাস সংশোধন করতে ইতোমধ্যে তিনি স্থানীয় ২ নম্বর কাটলা ইউপি অফিস থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ ও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ‘জীবিত আছেন’ মর্মে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

আর এসব প্রমাণপত্র নিয়ে তিনি উপজেলা নির্বাচন অফিসে ছয় বারেরও বেশি যোগাযোগ করেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশে সেই উপজেলা নির্বাচন অফিসে আরও কতবার গেলে কাগজে-কলমে তিনি ‘মৃত’ থেকে কবে ‘জীবিত’ হবেন তা জানেন না শিল্পী সুজিত চন্দ্র সরকার।

এ বিষয়ে সুজিত চন্দ্র সরকার বলেন, ‘২০১৭ সালে একই নামের আমার প্রতিবেশী ও সম্পর্কে আমার ভগ্নিপতি সুজিত রায় মারা যান। তখন ভোটার তালিকা হালনাগাদে মৃত ভগ্নিপতি সুজিত রায়কে মৃত না দেখিয়ে আমাকে মৃত দেখানো হয়েছে। ভোটার তালিকা সংশোধন করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলাতে অনেকবার গিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি।’

সুজিত বলেন, ‘শুধু তাই নয়, চলতি বছর গত ১১ এপ্রিল থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচন অফিসে ছয় বার গিয়েছি। সেখানে যেসব কাগজপত্র চেয়েছে সব দিয়েছি। এরপরও কোনো ভালো খবর পাইনি। শুধু নির্বাচন অফিস থেকে আমাকে জানানো হয়েছে, ভোটার তালিকায় আমার নাম জীবিত হিসেবে সংশোধনের জন্য আবেদন অনলাইনে পাঠানো হয়েছে।’

সুজিত চন্দ্র সরকার বলেন, ‘চলতি বছর মার্চ মাসে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক স্যার অসচ্ছল শিল্পী হিসেবে আমাকে পাঁচ হাজার টাকার চেক দিয়েছেন। কিন্তু ভোটার তালিকায় আমার পরিচয় ‘মৃত’ থাকায় সেই চেক ভাঙাতে পারছি না। শুধু তাই নয়, আমি জ্যান্ত মানুষটি কাগজে-কলমে মৃত, এটি মানুষের সামনে বলতেও বিব্রতবোধ করি।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকতা মো. আতাউল হক বলেন, ‘ভোটার তালিকায় সুজিত রায়ের তথ্য সংশোধন করার জন্য বিরামপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে আবেদন পাঠানো হয়েছে। এখন তার এনআইডি কার্ডটি খুঁজে দেখতে হবে কাজটি কোন অফিসে কী পর্যায়ে আছে। সুজিত রায়কে তার বর্তমান এনআইডি কার্ড নিয়ে অফিসে আসতে হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার বলেন, ‘শিল্পী সুজিত রায়ের সমস্যার কথা শুনেছি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ভোটার তালিকায় তার তথ্যগত সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/৩০জুলাই/এসএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :