বন্ড সুবিধা নিয়ে শুল্কমুক্ত পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি, গ্রেপ্তার ১১

প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০২১, ১৫:০৭ | আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২১, ১৮:০১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বন্ড সুবিধা নিয়ে বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত কাপড় আমদানি করতো একটি চক্র। এরপর অতিরিক্ত লাভের আশায় সেসব পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি করতো। বন্ডের অপব্যবহার করে শুল্কমুক্ত কাপড় খোলাবাজারে বিক্রির অভিযোগে একটি চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর নিউমার্কেট থানার এলিফ্যান্ট রোড ও তেজগাঁও থানার সাতরাস্তা মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, লালবাগ বিভাগের গোয়েন্দা দল ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. শাহাদাত হোসেন, মো. সাইফুল ইসলাম জীবন, মো. রুবেল আকন, মো. মাসুম, মো. মনির হোসেন, মো. রবিন ওরফে হৃদয় সরদার, মো. শাহিন হাওলাদার, মো. আরিফ হোসেন, মো. সোহাগ ফরাজী, মো. নাজিম ও মো. কামাল হোসেন।

তাদের বিরুদ্ধে নিউ মার্কেট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বন্ড সুবিধায় চীন থেকে শুল্কমুক্ত কাপড় আমদানি করে দেশের রাজস্ব খাতের ক্ষতি করছিল একটি চক্র। চক্রটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ময়মনসিংহের ভালুকা হয়ে রাজধানীর সাতরাস্তা স্ট্যান্ড ও এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় নিয়ে আসে। পরে অতিরিক্ত লাভের আশায় এসব কাপড় সুবিধামতো সময়ে চোরাইপথে খোলাবাজারে বিক্রি করতো। এতে করে সরকার প্রতিনিয়ত বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। এছাড়াও দেশের স্পিনিং, ওয়েবিং, ডাইং ও ফিনিসিং প্রতিষ্ঠান হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় প্রতিযোগিতার বাজারে ক্রমান্বয়ে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। এতে প্রকৃত ব্যবসায়ী ও শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত পণ্য দেশের কিছু কুচক্রি ব্যবসায়ী চোরাইপথে খোলাবাজারে বিক্রি করছে বলে তথ্য পায় গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। পরে গোয়েন্দা সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে বন্ড সুবিধায় আমদানি করা ৫০৮ রোল চোরাই পর্দার কাপড় (যার ওজন ১৮ হাজার ৭৫০ কেজি) জব্দ করা হয়। এসব কাপড়ের আনুমানিক মূল্য এক কোটি ২৭ লাখ টাকা। এছাড়াও চোরাচালানের কাজে ব্যবহৃত ছয়টি কাভার্ডভ্যান জব্দ করা হয়।

হাফিজ আক্তার আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা বন্ড সুবিধায় চীন থেকে শুল্কমুক্ত এসব কাপড় আমদানি করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ময়মনসিংহ (ভালুকা) হয়ে রাজধানীর সাতরাস্তা স্ট্যান্ড ও এলিফেন্ট রোড এলাকায় নিয়ে আসে। এসব কাপড় অতিরিক্ত লাভের উদ্দেশ্যে সুবিধামত সময়ে চোরাইপথে খোলাবাজারে বিক্রি করে। এতে করে সরকার প্রতিনিয়ত বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে।

হাফিজ আক্তার আরও বলেন, সরকার প্রতি অর্থবছরে বন্ডের মাধ্যমে ৭৩ হাজার কোটি টাকার বেশি শুল্ক ফ্রি সুবিধা দিয়ে থাকে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী বন্ডের লাইন্সেস ব্যবহারের প্রধান শর্ত হলো বন্ডের পণ্য রপ্তানি ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না। যদি কেউ বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত পণ্য বিক্রি করতে চায় তাহলে বন্ড কমিশনারের কাছে ২০ শতাংশ কমিশন বাণিজ্য শুল্ক প্রদান করে এবং অনুমতি নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন।

গ্রেপ্তার ১১ জনের বিরুদ্ধে নিউ মার্কেট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে। এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে কাস্টমসের পাশাপাশি ডিবি পুলিশও কাজ করছে বলে জানান হাফিজ আক্তার।

ঢাকাটাইমস/৩১জুলাই/এএ/এমআর