ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে মায়ের আহাজারি

প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০২১, ১৯:১৭

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

‘মোর জাদুধন রোজার ঈদের দিন ভাত খাইয়া বাইর (বের) হয়ছিল। রাইতে বাড়ি না আইলে (রাত) আমার বড় পোলা ফোন দেয়, ধরে না। পরের দিন হুনি বাবারে (ছেলে) পাটক্ষেতে মাইরা লাশ রেখে গেছে।’

শনিবার বেলা ১১টায় মাদারীপুরের কালকিনি প্রেসক্লাবে ছেলে হত্যার বিচার চাইতে এসে কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন হালিমা বেগম। ছেলে হত্যার আড়াই মাস পরে বিচারের দাবিতে সন্তানহারা মা ও তার পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এসময় নিহতের পরিবার দোষীদের কঠোর বিচার ও শাস্তি দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে নিহতের পরিবার লিখিত বক্তব্যে জানান, গত ১৪ মে কালকিনি উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীপুর গ্রামের আনোয়ার সর্দারের ছেলে হাবিবুর রহমান রোজার ঈদ করতে বাড়িতে আসেন। ওই দিন বিকালে তিনি পার্শ্ববর্তী পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের পশ্চিম চর গ্রামে নানা বাড়ি বেড়াতে যান। এরপর একাধিক বার তাকে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন সকালে নানা বাড়ির পাশে একটি পাটক্ষেতে হাবিবুরের লাশ দেখে খোঁজ দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পরিবার লাশ সনাক্ত করে।

ঘটনার রাতেই হাবিবুরের বাবা আনোয়ার সর্দার কালকিনি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাঞ্চন মিয়া তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ওইদিন হাবিবুরের সঙ্গে থাকা আক্তার ঢালী নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তি মতে এই মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। এরপর মামলাটি থানা থেকে গোয়েন্দা বিভাগে তদন্তের ভার দেয়া হয়। গোয়েন্দা টিম এই ঘটনায় নিহতের চাচাতো ভাই আবু বকরকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু আজও মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি। এতে হাবিবুর হত্যার বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ফলে সংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে হত্যার কঠোর বিচার দাবি জানায় নিহতের পরিবার।

নিহতের বড় ভাই সাব্বির হোসেন বলেন, ‘কোন রাঘব বোয়ালের কারণে মামলাটির কোন অগ্রগতি হচ্ছে না, এটা আমাদের বোধগম্য নয়। এর আগে পুলিশ বার বার বলেছে, মামলার ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু এখন কেন আগাচ্ছে না। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
এসময় নিহত হাবিবুরের বাবা আনোয়ার সর্দার ও ছোট ভাই রায়হান সর্দারও উপস্থিত ছিলেন।

তবে এ বিষয়ে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, মামলাটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে থানা থেকে ডিবিতে আনা হয়েছে। যেহেতু হত্যার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা যায়নি, তাই তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় সহেন্দভাজন দুইজনকে গ্রেফতার করেছি। আশা রাখি, অল্পদিনের মধ্যেই হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করতে পারবো। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই।

(ঢাকাটাইমস/৩১জুলাই/পিএল)