‘কামকাজ বন্ধ, খাদ্যের অভাবে রাস্তায় নাইমা গেছি’

প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০২১, ২০:৫৮ | আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২১, ২১:২১

কৌশিক রায়, ঢাকাটাইমস

‘করোনার কারণে আমাদের কাম-কাজ বন্ধ। আমরা এখন ভাত খাইতে পারছি না। এই অভাবে এখন রাস্তায় নাইমা গেছি। আমার চলাফেরায় কষ্ট, খাওয়ায় কষ্ট, পোলাপান নিয়ে বাঁচতে কষ্ট।’

হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে কাঁদো কাঁদো গলায় এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন আবুল বাসার। শনিবার রাজধানীর কল্যাণপুরে কথা হয় তার সঙ্গে।  প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মত গরিব যারা আছে এদেরকে একটু দয়া করেন।’

রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন আবুল বাসার। ছয়জনের সংসার তার। এক ছেলে তিন মেয়ে এবং তারা স্বামী-স্ত্রী। দিন কেটে যাচ্ছিল কোনো রকম। কিন্তু করোনা মহামারির সংক্রমণ বাড়ায় চলমান লকডাউনে থমকে গেছে তার জীবন। ঘরে নেই চাল কেনার টাকা। সেই সঙ্গে প্রতিদিনের ওষুধ খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। একটু পথ চললেই হাঁপিয়ে উঠছেন।

সকাল থেকে খাবারের সন্ধানে আছেন আবুল বাসার। যে সংসারে প্রতিদিনের খরচ পাঁচ থেকে ছয়শ টাকা সেখানে আট থেকে নয় ঘণ্টা হেঁটে মানুষের কাছে হাত পেতে পেয়েছেন মাত্র ১৮০ টাকা। পরিবারের সদস্যদের কথা চিন্তা করে নিজে কিনে কিছু খাননি। বেলা ১১টার দিকে অন্যের দেওয়া খাবার খেয়ে দিনটা পার করে দিয়েছেন।

আবুল বাসার জানালেন নিজের জীবনের দুঃখ-দুর্দশার কথা। ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘রাজমিস্ত্রির কাজ করতাম। করোনার কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে করমু কী? আমরা এখন ভাত খাইতে পারছি না, ছেলেও রাজমিস্ত্রির কাজ করতো, করোনার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এই অভাবে এখন রাস্তায় নাইমা গেছি। আমার চলাফেরায় কষ্ট, খাওয়ায় কষ্ট। পোলাপান নিয়ে বাঁচতে কষ্ট।’

আবুল বাসার বলেন, ‘সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হয়ে বিকাল ছয়টা পর্যন্ত পেয়েছি মাত্র ১৮০ টাকা। এক বাসা থেকে কয়টা ভাত দিয়েছিল সেখান থেকে খাওয়া-দাওয়া করছি।’

‘সারাদিন ঘুরে যা রোজগার করেছি এই টাকা খেয়ে ফেললে বাজার করুম কী দিয়ে। আমি খেয়ে ফেললে তো সবাই না খেয়ে থাকবে। আবার মাস শেষ হয়ে গেছে। ঘর ভাড়া দিতে হবে চার হাজার টাকা। সে টাকাই বা কই পামু।’

(ঢাকাটাইমস/৩১জুলাই/আরকে/জেবি)