হয়তো এসব আফসোসও একদিন ঘুঁচবে

প্রকাশ | ০১ আগস্ট ২০২১, ১৬:৪৬ | আপডেট: ০১ আগস্ট ২০২১, ১৭:৪০

শাকিব খান

যে কোনো পেশাতেই চড়াই উৎরাই থাকে। কিন্তু পরামর্শ দেয়ার সঠিক মানুষটি পেলে চড়াই উৎরাই মোকাবিলা করা যে কারো জন্য সহজ হয়ে যায়। অভিনয় পেশার শুরু থেকে আমি তেমন কিছু গুরুজন পেয়েছি, যারা আমাকে সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পরামর্শ দিয়ে গেছেন। অভিনয় শূন্য থেকে শুরু করেছিলাম; কিন্তু তাদের স্নেহ-মমতা আর আশীর্বাদের শীতল পরশ সঙ্গে ছিল বলেই আমি আজকে সবার কাছে শাকিব খান।

 

অভিনয়ে আসার পর যে কজন অভিভাবক পেয়েছি, তাদের অন্যতম ববিতা ম্যাডাম। তাঁর মতো এমন অভিজ্ঞ, দক্ষ অভিনয় শিল্পী মাথার উপর ছায়া হয়ে থাকলে সব কিছুই সহজ হয়ে যায়। অনস্ক্রিনে অসংখ্যবার দর্শক তাকে আমার মায়ের ভূমিকায় দেখেছেন, অথচ অফস্ক্রিনেও তিনি আমার কাছে তেমন একজন মমতাময়ী মা।

 

দেশের সিনেমাপ্রেমী মানুষের কাছে তো বটেই, বিশ্ব সিনেমার ইতিহাসেও যার নাম ডাক। কমার্শিয়াল সিনেমার পাশাপাশি ভিন্নধারার সিনেমাতেও তিনি ছিলেন স্বতঃস্ফূর্ত। তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হননি এমন প্রজন্ম খুঁজে পাওয়া যাবে না।

 

সেই সত্তরের দশকেই ববিতা ম্যাডাম বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে ঘুরেছেন। বাংলা সিনেমার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেই সময়ে দেশের সব গুণী নির্মাতাদেরও পছন্দের তালিকায় ছিলেন আমাদের ববিতা ম্যাডাম। কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ের মতো পৃথিবীখ্যাত নির্মাতার সিনেমাতেও।

 

বহুদিন তিনি সিনেমা থেকে দূরে। তাঁর সাথে আমার প্রায়ই কথা হয়। বর্তমান সিনেমার খোঁজ খবর নেন। আগের মতোই মমতাময়ী মায়ের কণ্ঠে সঠিক দিকনির্দেশনা দেন। তাঁর মতো গুণী অভিনয়শিল্পীর সাথে কথা বলতে বলতে মাঝেমধ্যে নিজেদের ব্যর্থতার কথাগুলোও স্মরণ করি।

 

ষাট, সত্তর, আশির দশকে পাশের দেশের সিনেমার অভিনেতা অভিনেত্রীদের ঘিরে কতো কতো সিনেমা নির্মিত হচ্ছে; অথচ ববিতা ম্যাডামদের মতো গুণী অভিনয়শিল্পীদের আমরা পরবর্তীতে আর ব্যবহারই করতে পারলাম না! তাদের জন্য যুঁতসই গল্প-চরিত্র নির্মাণ করতে পারলাম না! হয়তো এসব আফসোসও একদিন ঘুঁচবে।

 

লেখক: চলচ্চিত্র অভিনেতা

 

ঢাকাটাইমস/১আগস্ট/এসকেএস