শেরপুরে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকের বাবা-মায়ের পাশে প্রশাসন

শহর প্রতিনিধি, শেরপুর
 | প্রকাশিত : ০১ আগস্ট ২০২১, ১৮:২৬

শেরপুরের নকলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পোশাক শ্রমিক সোহাগের বাড়িতে গিয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজ-খবর ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। কিছু সময়ের জন্য হলেও ছেলের শোক ভুলে ছিলেন শোকাহত পরিবার।

রবিবার সকালে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুর রহমান উপজেলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নের মোজারকান্দা গ্রামের পোশাক শ্রমিক নিহত সোহাগের বাবা আতশ আলীর বাড়িতে গিয়ে শোক প্রকাশ করেন।

এছাড়া জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ মোবাইল ফোনে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান সরাসরি সোহাগের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। পরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পোশাক শ্রমিক সোহাগের বাবা-মায়ের হাতে জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদের পক্ষে নগদ ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা হিসেবে তুলে দেন ইউএনও জাহিদুর রহমান। এ সহায়তা পেয়ে সোহাগের মা-বাবা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও বানেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত, ইউপি সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম ও শাহজাহান মিয়া, নকলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন, যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফজলে রাব্বী রাজন ও সদস্য রাইসুল ইসলাম রিফাত, স্থানীয় মুরুব্বী সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ব্র্যাক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উপস্থিত ছিলেন।

সোহাগের শোকাহত বাবা আতশ আলী জানান, তার পরিবারের আয়ের একমাত্র ছেলে মারা যাওয়ায় আজ তারা অসহায় হয়ে গেছে।

আতশ আলী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ডিসি স্যার, ইউএনও স্যার, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ আপনারা আমাদের খোঁজ-খবর নেওয়ায় আমরা কিছু সময়ের জন্য হলেও ছেলে হারানোর শোক ভুলে ছিলাম।’

বানেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত জানান, ৩/৪ বছর আগের এই অসহায় পরিবারের জন্য উপার্জনের একমাত্র লোক ছিল পোশাক শ্রমিক সোহাগ মিয়া। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ায় পরিবারটি আবার অসহায় হয়ে গেলো। এই পরিবারের দিকে সবসময় সুদৃষ্টি রাখবেন বলে তিনি জানান। এছাড়া নিহত সোহাগের আহত স্ত্রী-সন্তানের আপাতত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুর রহমান বলেন, ওই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সোহাগের স্ত্রী ও তার এক শিশু সন্তান ছিল। শিশু সন্তানটি হাতে ও গলায় এবং স্ত্রী কোমরে ও বুকে আঘাত পেয়ে আহত হয়েছেন। তারা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছেন। তবে সুস্থ হতে চিকিৎসার জন্য তাদেরকে শেরপুর জেলা সদর বা নকলা হাসপাতালে ভর্তি হতে পরামর্শ দেন। এর জন্য ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে দিবেন বলে তিনি জানান।

পোশাক শ্রমিক সোহাগ মিয়া তার উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম পোশাক শিল্পের চাকরি বাঁচাতে ঢাকায় যাওয়ার পথে ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলার মধ্যবর্তী কোন এক এলাকায় শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে তাদের ট্রাকটিকে অন্য একটি ট্রাক ধাক্কা দিলে সোহাগ ও মিন্টু মিয়াসহ বেশ কয়েকজন ছিটকে রাস্তায় পড়ে যায়। ঠিক এসময় পিছন থেকে আসা দ্রুতগামী একটি ট্রাক সোহাগ মিয়ার ওপর ওঠে পড়ে। এতে সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। স্থানীয়রা বাকিদের গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

(ঢাকাটাইমস/১আগস্ট/এসএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :