কেন কঠোর লকডাউনেও থামছে না মৃত্যুর মিছিল?

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০২১, ১৬:৩৭ | আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২১, ১৬:৩৯

এম এম মাহবুব হাসান

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়। বিষয়টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ২০২০ সালের ১২ মার্চ ভাইরাসটিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ‘২০১৯-এনসিওভি’ নামকরণ করে। তবে COVID-19 হিসেবে ভাইরাসটি সর্বাধিক পরিচিতি লাভ করে। শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ১৯৮,৮৭৯,১৪২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে যার মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১৭৯,৫২১,৪৫০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৪,২৩৮,৫০৩ জন।

করোনাভাইরাসের ঝুঁকি প্রশমনে চীনের উহান প্রদেশে গত বছরের ২৩ জানুয়ারি সর্বপ্রথম লকডাউন শুরু হয়, এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে সংক্রমিত সকল দেশে লকডাউন ও শাটডাউন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়। তবুও মৃত্যুর মিছিল থেমে থাকেনি। গত বছর ইউরোপ-আমেরিকাতে করোনা সংক্রমণের ফলে যে পরিমাণ মৃত্যু সংবাদ পাওয়া যেত তা এ বছরে নেমে এসেছে হাতেগোনা সংখ্যায়। কারণ, সে দেশের নাগরিকরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নির্দেশিত সকল পরামর্শ অক্ষরে অক্ষের পালন করেছে, পাশাপাশি নিজ নিজ দেশের সরকারি সিদ্ধান্তগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজেদের জীবন বাঁচিয়ে রেখেছে। কোন দেশের নাগরিকরা যদি নিজেরাই সচেতন না হয় তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে পুরোপুরি সচেতন করে এমন মহামারি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

 

করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য অনেক গবেষণা হচ্ছে, ইতিমধ্যে কতগুলো ভ্যাকসিনও আবিষ্কার হয়েছে, তবুও কিছু কিছু দেশে এর প্রাদুর্ভাব কাটছে না। সম্প্রতি ভারতে করোনার ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট এক মহাবিপদ ডেকে এনেছে। ধীরে ধীরে কমতে থাকা সংক্রমণের সংখ্যা হঠাৎ করেই এ বছরের এপ্রিল থেকে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বাড়তে শুরু করে এবং পুরো ভারতকে পর্যুদস্ত করে ফেলে জুন পর্যন্ত। যদিও জুলাই থেকে এর প্রকোপ বেশ ভালোভাবেই কমতে শুরু করেছে, কারণ সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপগুলো জনগণ মানতে বাধ্য হয়েছে। এই বিশাল জনসংখ্যার ভারতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৩১,৬৯৩,৬২৫ জন যার মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৩০,৮৪৬,৫০৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৪২৪,৭৭৭ জন।

 

বাংলাদেশেও সংক্রমণের হার কমে এসেছিল, কিন্তু ভারতের এই ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশকে নতুন করে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। একদিকে আমাদের দেশের অনেকেই এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটিকে কষ্ট করে বহন করে নিয়ে এসেছে, অন্যদিকে সীমান্তবর্তী দেশ হিসেবেও বাংলাদেশকে এটির ভাগ পেতে হয়েছে। বিশেষ করে জুন থেকে এটি বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে যা প্রশমনে সরকার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছে। যদিও পরিস্থিতির তেমন একটা উন্নতি হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,২৬৪,৩২৮ জন যার মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১,০৯৩,২৬৬ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ২০,৯১৬ জন। সব দিক থেকে এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

 

গত বছর করোনা শুরু থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার সার্বিক করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যার মধ্যে লকডাউন; অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ নিষিদ্ধকরণ; একান্ত প্রয়োজন ব্যতীত মুক্ত চলাচল সীমাবদ্ধকরণ; জনসমাগম হয় এমন সকল আয়োজন বাতিল; নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির বাজার ও ব্যাংক বাদে সকল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ; স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ; সংক্রমিত ব্যক্তিদের নজরদারির আওতায় নিয়ে আসা; দেশব্যাপী গরিব ও অসহায়দের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ এবং টিকাদান কর্মসূচিসহ আরো অনেক কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে। সরকারের কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকায় রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ, ব্যাংকার, গণমাধ্যমকর্মী, সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসক, সিভিল প্রশাসন, আর্মি, বিজিবিসহ সরকারের অন্যান্য বাহিনী ও সংস্থার সদস্যবৃন্দ।

 

এছাড়া সরকারের সকল কার্যক্রমে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও সহযোগিতা করে যাচ্ছে। গত বছর করোনার শুরুতে দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষ থেকে ২০ হাজারের বেশি দরিদ্র পবিরাবরকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয় এবং পারটেক্স পরিবার ও উত্তরণ ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ১০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মাস্ক, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও খাদ্য সহায়তা বিতরণসহ অসংখ্য কাজে সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে।

 

এত এত উদ্যোগের ফলেও বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না কেন?

 

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে করোনা মোকাবেলায় বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির দেশ ও সবচেয়ে ভালো পরিস্থিতির কয়েকটি দেশের দিকে নজর দিতে হবে।

 

খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পেরু বিশ্বের অন্যতম। সেখানকার সরকার প্রথমে করোনা সংক্রমণজনিত মৃত্যুর সঠিক তথ্য প্রকাশ করেনি, পরবর্তীতে সরকার ঘোষণা করে যে, তাদের দেশে মৃত্যুর সংখ্যা ১৮০,০০০ জন ছাড়িয়ে গেছে কিন্তু পূর্বের রিপোর্ট অনুযায়ী এই সংখ্যা ছিল ৬৯,৩৪২ জন। অথচ পেরুতে ‘লাম্বদা’ নামক নতুন একটি ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব হয় যা পরবর্তীতে ২৯টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে পেরুর প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে মৃত্যুবরণ করে প্রায় ৫৯৪১ জন। মহামারির শুরুতে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন যে, ২০২০ সালের ঠিক ৩ মে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে। পরবর্তীতে লকডাউন শিথিল করা হয় এবং কার্যত ১৬ জুনের পর থেকে করোনাভাইরাসজনিত সকল নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল সরকার। ফলে দেশটিতে প্রতি ১০ লাখে ৩১০৮ জন লোক করোনায় মারা যায়, এমনকি হাঙ্গেরিতে কোভিডজনিত মৃত্যুর হার এখন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

 

ভালো পরিস্থিতির মধ্যে তাঞ্জানিয়া বিশ্বের সর্বপ্রথমে অবস্থান করে নিয়েছে। দেশটির সরকার ও জনগণ দ্রুত ভাইরাসটি প্রতিরোধ ও প্রশমনে সাড়া দিয়েছিল। বিশেষ  করে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা ও সকলের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নির্দেশিত সকল সুপারিশমালা মেনে চলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হয়। প্রতিটি কাজেই সরকারের সাথে জনগণ অংশগ্রহণ করে এবং শতভাগ সফল হয়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো তাঞ্জানিয়াতে কোনো প্রকার ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়নি। ফলে দেশটিতে ১০ লাখের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ০.৩৫ জনের অর্থাৎ ১ জনের কম বা ৩০ লাখে মাত্র ১ জন।

 

করোনা মহামারির শুরুতে বুরুন্ডি সরকার খুবই শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে। গত বছরের জুনে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি পিয়েরে নকুরুনজিজা করোনায় মারা গিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন যে তার শরীর ঈশ্বরের দ্বারা সুরক্ষিত। কিন্তু  দেশের নতুন রাষ্ট্রপতি এভারিস্ট নাদাইশিমিয়ে পরে ঘোষণা করেছিলেন যে কোভিড-১৯ দেশের ‘সবচেয়ে বড় শত্রু’ এবং সরকার তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা কার্যকর করেছে। এর প্রেক্ষিতে বুরুন্ডি ইউনিসেফের বেশ সাহায্যও পেয়েছিল এবং সংস্থাটি বুরুন্ডিতে জনসচেতনতামূলক ব্যাপক প্রচারাভিযান পরিচালনা করে। বিশেষ করে ভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধ করতে হাত ভালো করে ধোয়ার বিষয়টিকে প্রচার করে, পাশাপাশি বুরুন্ডিয়ানদের জন্য সাবানকে আরও সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য করে তোলে সংস্থাটি। ফলে ভালো পরিস্থিতির মধ্যে বুরুন্ডি বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থান করে নিয়েছে এবং দেশটিতে ১০ লাখের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ০.৬৭ জনের।

 

খারাপ পরিস্থিতির দিক থেকে সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকা পেরু ও হাঙ্গেরির দিকে তাকালে দেখা যাবে যে, দুটি দেশের সরকারপ্রধান থেকেই নীতিগত কোনো ভালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি ফলে দেশটিতে করোনাভাইরাস বাসা বাঁধে এবং মানুষের জীবন বিনাশ করে। পক্ষান্তরে ভালো পরিস্থিতির দিক থেকে সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকা দেশ তাঞ্জানিয়া ও বুরুন্ডির দিকে তাকালে দেখা যাবে দুটি দেশের সরকারই যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং দুটি দেশের জনগণই সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে করোনা মোকাবিলায় সফল হয়েছে।

 

এখন প্রশ্ন হলো বাংলাদেশ কি তাঞ্জানিয়া বা বুরুন্ডির মতো হতে পারে?

এক কথায় বললে- এর উত্তর হবে ‘হ্যা’। কারণ, করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত যতগুলো পদক্ষেপ বা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে অন্য কোনো দেশে তা নেওয়া হয়েছে কি না সঠিক জানা নেই। তবুও আমাদের দেশের করোনা ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। এর পেছনে বড় কারণ হচ্ছে জনগণের সচেতনতার অভাব। এদেশের জনগণ এখনো পর্যন্ত করোনাকে পুরোপুরি জীবননাশকারী ভাইরাস হিসেবে মানতে পারেনি। রাজধানী ঢাকা শহরের বেশিরভাগ নাগরিকই এখনো মাস্ক পরাকে আবশ্যকীয় ভাবতে শেখেনি, অথচ মাস্ক পরাকে ভ্যাকসিন থেকেও কার্যকর বলা হচ্ছে,  জনগণের অসচেতনতার মতো একটি বড় কারণে সরকারের অসম্ভব রকমের চেষ্টার ফসলকে ঘরে তোলা সম্ভব হচ্ছে না।

সুতরাং জনগণকে আগে মাস্ক পরতে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বাধ্য করতে হবে। এটি হতে হবে আপসহীন সিদ্ধান্ত। সেজন্য প্রতিটি সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ নিজ নিজ নাগরিকদের মাস্ক পরতে বাধ্য করবেন। প্রয়োজনে নিজেদের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, স্কাউট সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক এবং শিক্ষার্থীদেরকে কাজে লাগাবে। মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে আপস করে লকডাউনে কোনো ফলাফল বয়ে আনবে না।

সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে যে সকল উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সেগুলো বাস্তবায়নে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।  না হলে কঠোর লকডাউনও কখনো কখনো শিথিল হয়ে যাচ্ছে এবং করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরবচ্ছিন্ন ও অটল সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে সরকার গৃহীত কঠোর লকডাউন নীতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে নতুবা মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক করে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। এক্ষেত্রে- ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক, শপিং মলের কর্তৃপক্ষগণ, বাজার ও দোকান মালিক সমিতিসহ সকল ব্যবসায়ী ফোরামের সাথে সমন্বিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে; প্রয়োজন মোতাবেক পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়ে সর্বত্র মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি মনিটর করা যেতে পারে। দরকার হলে সকলের কন্ট্রিবিউশনে স্বেচ্ছাসেবকদের দৈনিক সম্মানী/ভাতার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে চাকরি হারানো অনেক শিক্ষিত বেকার বা ঘরে বসে থাকা অনেক শিক্ষার্থীর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

এছাড়া করোনা সংক্রমণ রোধে অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। সরকার গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) পরামর্শগুলো মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নে শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোই যথেষ্ট নয়। সরকারের পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন ও প্রতিপালনের জন্য স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। কারণ- তাদের অসংখ্য কর্মকান্ডের সাথে করোনা প্রতিরোধে করণীয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। অল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে এই ১৮ কোটি মানুষের দেশের করোনা পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়া সত্যিই দুরূহ কাজ, তাই যতটা সম্ভব প্রতিটি স্তরে অংশীদারিত্ব বাড়াতে হবে।

 

করোনায় এখনই মৃত্যুর মিছিল থামাতে তাঞ্জানিয়া, বুরুন্ডি, লাওস, ভুটান ও চায়নার  মতো প্রশংসিত উদাহরণগুলোকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাকে টিকা থেকেও সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। আর নিজেদেরকে আরো সচেতন করতে এবং জীবনগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে পেরু, হাঙ্গেরি, বসনিয়া, হার্জেগোভিনা, চেকিয়া ও সানমারিনোর মতো দেশগুলোর সরকার ও জনগণের আত্মঘাতী সিদ্ধান্তগুলোকে এড়িয়ে চলতে হবে।

লেখক: ব্যাংকার