জিয়া নন, ১৫ আগস্টে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে আ.লীগ: ফখরুল

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০২১, ১৯:১৭ | আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২১, ২০:৫১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা নাকচ করে দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার দাবি, নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড আওয়ামী লীগই ঘটিয়েছে। জিয়াউর রহমানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে সরকার ‘নতুন গীত’ গাইছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

সোমবার এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। লালমনিরহাট বিএনপির উদ্যোগে জেলার কোভিড-১৯ হেল্প সেন্টারের উদ্বোধন এবং করোনাভাইরা সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদানে এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমানকে সম্পৃক্ত করে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এদের (আওয়ামী লীগ সরকার) কাজ কী? এদের কাজ হচ্ছে সারাক্ষণ বিএনপিকে দোষারোপ করা, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবকে কীভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা যায় তার চেষ্টা করা, কীভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে খাটো করা যায় তার চেষ্টা করা, কীভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করা যায় সেই চেষ্টাই তারা করছে।’
ফখরুল বলেন, ‘অত্যন্ত সম্মানিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ১৫ আগস্টের যে হত্যাকাণ্ড ১৯৭৫ সালে। আমরা কিন্তু প্রত্যেকবার আমাদের নেতা, আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া পার্লামেন্টে সবসময়েই এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। আমরা কেউই কোনো হত্যাকাণ্ড সমর্থন করি না। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে, বিচার করেছেন আপনারা (আওয়ামী লীগ সরকার)…। সেই বিচার করার পরে সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। অথচ আপনারা এখন শুরু করেছেন নতুন একটা গীতের গান, গীত গাওয়া, গান গাওয়া যে, জিয়াউর রহমান এটার সাথে সম্পৃক্ত ছিল।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোথাও প্রমাণ করতে পারেনি, কেউ না। আজ পর্যন্ত কেউ এই কথা বলে নাই যে, জিয়াউর রহমান সাহেব সম্পৃক্ত ছিলেন। জিয়াউর রহমান সাহেব তো তখন ডেপুটি চিফ মার্শাল এডমিনিস্টারও ছিলেন না। তিনি সেনাবাহিনীর উপপ্রধান ছিলেন মাত্র। সেনাপ্রধান ছিলেন শফিউল্লাহ সাহেব (কেএম শফিউল্লাহ)। সেই শফিউল্লাহ সাহেব তো গিয়ে খন্দকার মোশতাকে যেতে স্যালুট করেছেন, একে খন্দকার সাহেব (বিমান বাহিনী প্রধান) স্যালুট করেছেন, নেভাল চিফ স্যালুট করেছে। আপনাদের খন্দকার মুশতাক সাহেবের সঙ্গে পুরো ৩১ জনের মন্ত্রিসভা গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের রক্তের ওপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে তারা মন্ত্রিত্বের শপথ নিয়েছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড তো আপনারা ঘটিয়েছেন, আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে। অন্য কেউ তার সঙ্গে জড়িত ছিল না। যারা করেছে তারা সামরিক বাহিনীর লোক ছিল। তাদের সঙ্গে আপনারা যুক্ত ছিলেন বলেই আপনারা করেছেন। সুতরাং ওই মাছ দিয়ে শাখ ঢাকার চেষ্টা করবেন না। নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্যে অন্যকে দোষারোপ করে লাভ নেই। নিজেরা পরিষ্কার হোন, নিজেরা পরিচ্ছন্ন হোন, পরিশুদ্ধ হোন।  হত্যার রাজনীতি বাদ দেন এবং সন্ত্রাসের রাজনীতি বাদ দেন, জনগণকে প্রতারণা করবার রাজনীতি বাদ দেন। বাদ দিয়ে আপনারা সঠিকভাবে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করেন। ১৯৭২ সালে সেই সংবিধান সেই সংবিধান মতো কাজ করেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে কী করেছেন? সমস্ত অধিকার খর্ব করে দিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের। যারা লিখতে না পারে সংবাদ কর্মীরা সেইজন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করেছেন। এখন কথায় কথায় এই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের লেলিয়ে দেন তারা ধরে নিয়ে এসে বিভিন্ন রকমের অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতন করে, তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই যে একটা ভয়াবহ অবস্থা থেকে আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে। একদিকে আমরা জনগণের পাশে গিয়ে দাঁড়াবো অন্যদিকে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই দানব সরকারকে সরানোর জন্য আমাদেরকে লড়া্ই করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যদি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা চেষ্টা করি অবশ্যই আমরা জয়ী হবে, জয় আমাদের সুনিশ্চিত ইনশাল্লাহ।’
জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক বক্তব্য দেন।
(ঢাকাটাইমস/০২আগস্ট/বিইউ/জেবি)