‘পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কমিশন কাজ করছে, নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করুন’

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২১, ১১:৫৮

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

পুঁজিবাজারের উন্নয়ন এবং বিনিয়োগকারীদের অর্থ রক্ষায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড কমিশন কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

নিশ্চিন্তে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, দেশে ব্যবসায়ের সকল সুযোগ রয়েছে। আপনার নিশ্চিন্তে এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে অনুষ্ঠিত ইউএস-বাংলাদেশ টেক ইনভেস্টমেন্ট সামিটে এসব মন্তব্য করেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, বাংলাদেশি প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নতুন একাউন্টের মাধ্যমে বিনিয়োগ করে মুনাফা তুলতে পারবে।

অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের মেয়র লিসা এম গিলমোর। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বেপজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এন্ড প্রাইভেট ইক্যুইটিজ এসোসিয়েশনের সভাপতি শামীম আহসান।

অনুষ্ঠানে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের প্রচুর রিটার্ন দেওয়ার চেষ্টা করছে। যার ফলাফল পুঁজিবাজারে ইতোমধ্যে দেখা গেছে। হংকংয়ের ফ্রন্টিয়ার জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশ এশিয়ার সেরা পুঁজিবাজারে উঠে এসেছে।

‘আমাদের দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দিন দিন বাড়ছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে শিক্ষিত ও আধাশিক্ষিত শ্রমিকেরা। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে, প্রতিনিয়ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এছাড়া দেশটির পুঁজিবাজার অনেক ভালো করছে এখন। এদিকে দেশটির রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ছে প্রতিনিয়ত।’-যোগ করেন তিনি।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ডিএসইএক্স ডাবল ডিজিট গ্রোথ ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি মাসে ডিএসইর মোট বাজার মূলধন রেকর্ড ৬৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান নিয়ে কাজ করেছেন। আজ আমরা অনেক গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, খাদ্যে স্বয়ংসম্পর্ণ আমাদের দেশ। এছাড়া পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় বাংলাদেশ। বাসস্থান শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে বৃদ্ধি করা হচ্ছে এখন। আমাদের দেশের মানুষের অধীকাংশ প্রয়োজনীয়তা পূরণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন। তাই বর্তমানে কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত সকল পণ্য বাংলাদেশে শুল্কমুক্ত তৈরি করা হচ্ছে। এর পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, আইসিটি রপ্তানি খাত বর্তমানে এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশের বিপুল জনসংখ্যাই এখন সম্পদ হিসেবে তৈরি হয়েছে। দেশটিতে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ‌্যা মোট ১৭০ মিলিয়ন এবং ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীর সংখ্যা রয়েছে ১১২ মিলিয়ন। বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে তিন জনের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) একাউন্ট রয়েছে। এর মধ্যে প্রতি পাঁচ জনের একজন সক্রিয় থাকে। অপরদিকে বাংলাদেশের ই-কমার্স ২০২৩ সালে ৩ বিলিয়ন ডলারে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে। এর পরিমাণ বর্তমানে রয়েছে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বে বাংলাদেশের ই-কমার্স বাজারের অবস্থান ৪৬তম। দুই হাজার সাইট এবং ৫০ হাজার ফেসবুক পেইজ রয়েছে এগুলোর।

শিবলী রুবাইয়াত আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে যুবকদের জন্য অনেক সুযোগ রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কথা বলা যায়। আমাদের জাতীয় দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চেষ্টা করে আসছে, কিন্ত পারছে না। তবে যুবা দল গত বছর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাই বলতে চাই, বাংলাদেশে ব্যবসায়ের সকল সুযোগ রয়েছে। আপনার নিশ্চিন্তে এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন।

(ঢাকাটাইমস/৩আগস্ট/এসআই/এমআর)