তালেবানের উত্থান, শান্তিচুক্তিকে দুষলেন আফগান প্রেসিডেন্ট

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২১, ১২:০৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দুই দশক পর চুপিসারে আফগানিস্তান ছেড়েছে মার্কিন সেনারা। অল্প যে কয়জন আছেন তারাও কয়েকদিনের মধ্যেই ফিরে যাবেন নিজ দেশে। মার্কিন সেনা সরিয়ে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত গতিতে বেশিরভাগ এলাকা দখলে নিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্টী তালেবান। এমন অবস্থার জন্য তালেবান-মার্কিন শান্তিচুক্তিকেই দুষছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।

সোমবার পার্লামেন্টে নিরাপত্তা পরিকল্পনা উপস্থাপন করে আফগান প্রেসিডেন্ট বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পরিস্থিতি ছয় মাসের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এক্ষেত্রে  যুক্তরাষ্ট্র পূর্ণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

যদিও আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন আশরাফ ঘানি। তিনি বলেন, ‘বিদেশ থেকে আমদানি করা, তড়িঘড়ি করে তৈরি করা একটা শান্তি চুক্তির জন্যই আজ আমাদের এই হাল।’

এসময় তিনি তালিবানকে ঠেকাতে যাতে জাতীয় স্তরে কিছু আইনে শীঘ্র সায় দিতে আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

গত বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি তালেবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তি সাক্ষর করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে বলা হয়েছিল, তালেবান যদি আফগানিস্তানে বিদেশি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে আর ঘাঁটি গাড়তে না দেয়, তাহলে আগামী ১৪ মাসের (অর্থাৎ ২০২১-এর এপ্রিলের) মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা পুরোপুরি সরে যাবে। জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরে এপ্রিলের সময়সীমা বাড়িয়ে আগস্ট করেন। সেই অনুযায়ী, দীর্ঘ দু’দশকের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পরে এ বছর ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে পুরোপুরি সরে যাচ্ছে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী।

এমন অবস্থায় ২৫ বছর আগের মতো ফের এক বার ক্ষমতা দখল করতে তৎপর হয়েছে তালেবান। দেশের অর্ধেকের বেশি প্রদেশ এখন তালেবানের দখলে। তাছাড়া, দেশের পশ্চিমে ইরানের সঙ্গে এবং পূর্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তের অনেকটাই এখন তালেবান নিয়ন্ত্রণ করছে। এখন তারা প্রাদেশিক রাজধানী ও বড় বড় শহরগুলি দখল করার লক্ষ্যে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করছে।

দেশের নিরাপত্তা পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট জানান, এই পরিস্থিতিতে তার প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য- প্রাদেশিক রাজধানী ও দেশের প্রধান শহরগুলিতে তালেবান আগ্রাসন ঠেকিয়ে রাখা।

তালেবান প্রসঙ্গে আলোচনার জন্য আজ আফগান পার্লামেন্টে এক বিশেষ অধিবেশন ডেকেছিলেন প্রেসিডেন্ট। সকালে পার্লামেন্টের ঠিক উল্টো দিকে, দারুল আমন প্রাসাদ চত্বরে নামে প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার। সেখানে গার্ড অব অনার নেওয়ার পরে পার্লামেন্টে বিশেষ বক্তৃতা দেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট দাবি করেন যে, তার সেনাবাহিনীর হাতে ‘জঙ্গিদের’ ঠেকানোর যথেষ্ট রসদ মজুদ রয়েছে। এদিন আফগান সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, তালেবান ঠেকিয়ে শহর বাঁচাতে বিশেষ কম্যান্ডো বাহিনী তৈরি করেছে তারা।

ঢাকাটাইমস/০৩আগস্ট/একে