বস্তিবাসী গ্রামে ফিরলে জমিসহ ঘর পাবেন: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২১, ১২:৪২ | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২১, ১২:৫১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বস্তিবাসীদের কেউ গ্রামে ফিরলে জমিসহ তাদের ঘর দেয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া ঢাকায় বস্তিবাসীদের জন্য স্বল্প ভাড়ায় আরও আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের স্ব-অর্থায়নে বস্তিবাসীদের জন্য মিরপুরে নির্মিত ভাড়াভিত্তিক ৩০০টি ফ্ল্যাট হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে নির্বাচিত তিনজন উপকারভোগী বস্তিবাসীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বরাদ্দপত্র তুলে দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।

বস্তিতে বসবাস করা নিম্নআয়ের মানুষের জন্য ফের ঘরে ফেরার কর্মসূচি শুরু হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বস্তিতে বাস করা কেউ ঘরে ফিরতে চাইলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে জমিসহ তাদের ঘর দেয়া হবে। ছয় মাস যেন তারা চলতে পারে সে ব্যবস্থাও করা হবে। ঘরে ফেরা কর্মসূচি আবার শুরু করব। আর যারা ঢাকায় থাকছে তারা ভাড়া দিয়ে থাকবে।

জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সরকার কাজ করছে জানিয়ে সরকারপ্রধান আরও বলেন, দেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। জাতির পিতার এই বাংলাদেশে প্রত্যেকটি মানুষ সুন্দর ও উন্নত জীবন পাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা তার জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য। তিনি সবসময় একটি কথাই বলতেন, ‘আমার জীবনের একমাত্র কামনা বাংলাদেশের মানুষ অন্ন পাবে, বস্ত্র পাবে, তারা উন্নত জীবনের অধিকারী হবে।’ এই বাংলাদেশের মানুষ রোগে-শোকে ছিল। শিক্ষার আলো পেত না। তাদের ভাগ্যোন্নয়ন করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর মূল লক্ষ্য। এজন্য ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি থেকে তিনি ধাপে ধাপে জাতিকে মুক্ত ও স্বাধীন করেছেন। আর এই দাবির সংগ্রামের মধ্যেই তাকে জেলে নিয়েছে, নির্যাতন করেছে, হত্যা করতে চেয়েছে।’

সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে ভূমিহীনদের ঘর করে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। সাড়ে তিন বছর একটা রাষ্ট্রের জন্য কম সময়। তখন তো একটা প্রদেশ ছিল, সেটা দেশে উন্নীত করা ও তার গঠন করা; এটা তিনি করে গেছেন। কিছু বেইমান-মুনাফিকের জন্য তার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠন সম্ভব হয়নি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের সময় আমরা দেশের বাইরে ছিলাম। আমার দল ও বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় ফিরে আসি। আমার আসার পথ সহজ ছিল না। তৎকালীন ক্ষমতা দখলকারীরা নানা বাধা সৃষ্টি করেছে। আজকে আমরা ক্ষমতায়। সরকারে থেকে তৃণমূল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন, তাদের জীবনমান উন্নত করা এবং সংবিধানের আলোকের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছি।’

রাজধানীর মিরপুরের ১১ নম্বর সেকশনে ১৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে এ প্রকল্প। এখানে ১৪ তলার পাঁচটি ভবনে ৫৩৩টি আধুনিক ফ্ল্যাট তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন ৬৭৩ বর্গফুট। এক একটি ফ্ল্যাটে রয়েছে দুটি করে বেডরুম, একটি বারান্দা, একটি ড্রয়িং রুম, বেসিন, রান্নাঘর ও দুটি বাথরুম।

প্রতিটি ফ্ল্যাটের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এর সঙ্গে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ ও অন্য সার্ভিস চার্জ যুক্ত হবে।

গত রবিবার লটারির মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারের জন্য ফ্ল্যাট নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

ঢাকাটাইমস/৩আগস্ট/এমআর