নারী পাচারকারী চক্রের চার সদস্য আটক

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২১, ২০:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর ডেমরা, কেরানীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ এলাকা থেকে নারী পাচারকারী চক্রের চার সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব-৩। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও কম্পিউটার জব্দ করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- মোছা. শামীমা আক্তার, শংকর বিশ্বাস, শেখ হানিফ মিয়া এবং মো. জুয়েল হোসাইন।

মঙ্গলবার বিকালে র‌্যাব-৩ এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এক ভুক্তভোগীর মায়ের অভিযোগ পেয়ে র‌্যাব ৩ এর দল গতকাল সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর ডেমরা, কেরানীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে চারজন নারী পাচারকারী চক্রের  সদস্যকে আটক করা হয়।

আটককৃতদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, আটককৃত শামীমা ওই ভুক্তভোগীর বান্ধবী। শামীমার সঙ্গে দুবাই প্রবাসী অপুর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুত্ব ছিল। অপু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি  মাসে দেশে বেড়াতে আসেন। তখন ওই ভুক্তভোগী ও শামীমার সাথে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় দেখা করেন অপু। অপু তখন ভুক্তভোগীকে দুবাই একটি শপিংমলে মাসে ৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির লোভ দেখান। ওই ভুক্তভোগী রাজি হলে, অপু তার পরিবারের সদ্যদের কাছে বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন। শামীমা গোপনে ওই ভুক্তভোগীর পাসপোর্ট তৈরি করে দেন। এরপর অপু দুবাই প্রবাসী ওই চক্রের মূলহোতা মো. কামাল হোসাইনের মোবাইল নম্বর দেন ভুক্তভোগীকে। কামাল ভুক্তভোগীকে পল্টনের মেসার্স মেহরাব এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল্স এজেন্টের টিকেট ম্যানেজার শেখ হানিফ মিয়ার কাছে পাসপোর্ট জমা দিতে বলেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, আটক মো. জুয়েল হোসাইন দুবাই প্রবাসী। তিনি শেখ হানিফ মিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দুবাই প্রবাসী কামাল জুয়েলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ঘটনার সময় জুয়েল দুবাই ছিল। তিনি ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসেন। কামাল দুবাই থেকে জুয়েলের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর দুবাই যাওয়ার খরচ বাবদ এক লাখ ৩০ হাজার টাকা হানিফের কাছে পাঠান। হানিফ ও তার কর্মচারী শংকর ভুক্তভোগীকে তিন মাস মেয়াদী দুবাইয়ের টুরিস্ট ভিসা এবং বিমানের টিকিট করে দেন। পরে কামাল ভুক্তভোগীকে জানান যে, তার ভিসা এবং টিকিট তৈরি হয়ে গেছে। চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল  দুপুরে হানিফের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভুক্তভাগী মা ও বোনকে কিছু না জানিয়ে গত ৩০ এপ্রিল রাতে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা করে। দুবাই বিমান বন্দরে পৌঁছলে কামাল ভুক্তভোগীকে তার বাসায় নিয়ে যান।পরে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে তার পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে যান। তারপর কামাল ওই ভুক্তভোগীকে জোর করে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই কাজে ভুক্তভোগী রাজি না হলে তিনি ভুক্তভোগীকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। তিনি শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার মায়ের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে উদ্ধার করার আকুতি জানান। এরপর ভুক্তভোগীর মা র‌্যাব-৩ এর কাছে তার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য অভিযোগ জানান।  ভুক্তভোগী জানান, ওই চক্রের মূলহোতা কামাল ২২ বছর ধরে দুবাই বসবাস করেন। তার সুমাইয়া নামে দুবাইয়ে এক নারী সহযোগী রয়েছে। অপু প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়ের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে গড়ে তোলেন। পরে তাদেরকে উচ্চ বেতনে দুবাইয়ে চাকরির লোভ দেখান। ওই প্রলোভনে রাজি হলে কামাল নিজ খরচে বিভিন্ন মেয়েদের টুরিস্ট ভিসায় দুবাই নিয়ে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করেন। বর্তমানে ওই ভুক্তভোগীর সঙ্গে তার মা যোগাযোগ করতে পারছেন না।

আটককৃতদের বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/০৩আগস্ট/এএ/জেবি)