তাহিরপুরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হত্যা চেষ্টা মামলায় স্বামী গ্রেপ্তার

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২১, ২০:৩৭ | আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২১, ১৪:২৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হাত,পা ও মুখ বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে হত্যা চেষ্টার মামলায় প্রধান আসামি স্বামী আবু তাহের জান্নাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আবু তাহের জান্নাত দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাজিদ মিয়ার ছেলে।
মঙ্গলবার সকালে গোপন সংবাদে জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার (বর্তমানে নতুন নামকরণ শান্তিগঞ্জ উপজেলা) ডুংরিয়া গ্রামের বাজারে অভিযান চালিয়ে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জয়নাল আবেদীন। তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আবু তাহের জান্নাতকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। হত্যার চেষ্টায় স্বামী, শ^শুর, দেবরসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে গত শনিবার রাত ১২টার পরে ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে মামলাটি তার বড় ভাইয়ের মাধ্যমে করে।
এদিকে, মামলার প্রধান আসামি আবু তাহের আটক হলেও মামলার অপর চার আসামি জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাজিদুল মিয়া (আবু তাহের এর বাবা), দুই দেবর জাকির হোসেন (২২) ও বাবুল মিয়া (২৫) এবং ননাই গ্রামের মামা শশুর আলী হোসেন (৪০)পলাতক রয়েছেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর গত ৮ মাস পূর্বে মাইফুল নেছার (২৩) সাথে আবু তাহের জান্নাতের (২৮) সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী আবু তাহের জান্নাত শ^শুরবাড়ির পার্শ্ববর্তী ভোলাখালি গ্রামের এক ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে সাথে নিয়ে সংসার করার পাশাপাশি পাশেই একটি ঘরে পোল্ট্রি মোরগের ব্যবসা শুরু করে তার বাবা, দু ভাইকে নিয়ে। ৪-৫ মাস ভাল সংসার চলার পর গত মাসখানেক ধরে মাইফুলকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিচ্ছিল স্বামী আবু তাহের। কিন্তু টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মাইফুল নেছাকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। কিছুদিন পূর্বে বিষ খাইয়ে মেরেও ফেলতে চেয়েছিল। এ নিয়ে বিচার শালিসেও দোষীও হয় স্বামী আবু তাহের। পরে মাইফুল বাবার বাড়িতে চলে যায়। এরপর গত ৩০জুলাই রাত ৮টায় রাতে মেয়ে নিজ বাড়িতে টয়লেট গেলে মেয়ের স্বামী, শ^শুর ও দেবররা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে মুখ চেপে ধরে হাত, পা বেঁধে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে পাশে বাড়ির পাশে ভাঙার খাল নদীতে ফেলে দেয়। মেয়ের আসতে দেরি দেখে বাড়ি থেকে বের হয় সবাই। তখন গুংগানির শব্দ শুনতে পেয়ে পাশের বাড়ির আবুল হোসেন নদী কিনারে পানি ও কাঁদার মধ্যে থাকা অবস্থায় বস্তার মুখ খুলে মাইফুলকে দেখে চিৎকার দিলেই সবাই জড়ো হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে তাহিরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় হত্যার চেষ্টায় স্বামী, শ^শুর, দেবরসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে গত শনিবার রাত ১২টার পরে ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে মামলাটি তার বড় ভাইয়ের মাধ্যমে করেন। মাইফুল নেছা উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদালারপাড় গ্রামে কারী মৃত নিজাম উদ্দিনের মেয়ে।
(ঢাকাটাইমস/৩০জুলাই/এলএ)