মাদ্রাসার খাদ্যে বিষক্রিয়ায় শিশুর মৃত্যু, ছয় শিক্ষক গ্রেপ্তার

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২১, ২১:৩৮

নোয়াখালী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মিশন নূর হাদি নামে ১০ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এক মাদ্রাসা শিক্ষকসহ আরও ১৮ জন অসুস্থ হয়েছেন। যার মধ্যে ১৭ অসুস্থ শিশুকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভর্তিকৃত সকলের বয়স ৯ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। ঘটনায় নিহতের চাচার করা মামলায় ছয় শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার রাত ৯টার দিকে একলাশপুর বাজারের দোতালা মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিশন নূর হাদি ওই মাদ্রাসার নূরানী শাখার ছাত্র ছিল।

স্থানীয়রা বলছে, প্রতিদিনের এশার নামাজ শেষ করে রাত ৯টার দিকে মাদ্রাসার একজন শিক্ষকসহ রাতের খাবার খায় নূরানীর শাখার প্রায় ১৮ জন শিশু শিক্ষার্থী। খাওয়ার শেষ পর্যায়ে এসে একজন একজন করে সবাই বমি করতে শুরু করে। একপর্যায়ে সবাই বমি করতে শুরু করলে মাদ্রাসা কৃর্তপক্ষ স্থানীয় একজন চিকিৎসককে মাদ্রাসায় নিয়ে আসেন। পরে তিনি তাদের অবস্থা দেখে দ্রুত জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। রাত ১১টার দিকে তাদের হাসপাতালে আনা হয়।

অসুস্থদের সাথে আসা মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী বলেন, নূরানীর ছাত্ররা যখন ভাত খাচ্ছিল- তখন আমরা নামাজ পড়ছিলাম। তাদের চিৎকার শুনে আমরা এসে দেখি, সবাই বমি করছে। গুরুর মাংসগুলো একসাথে দুপুরে রান্না করে আলাদা দুই ভাগ করে রাখা হয়েছিল। দুপুরে খাওয়ার পর কারো সমস্য হয়নি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেনের সাথে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, রাতে ভাতের সাথে বাচ্চাদের গরুর মাংস দেওয়া হয়- যা দুপুরেও তারা খেয়েছিল। স্থানীয় এক মহিলা তাদের খাবার রান্না করেন।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম জানান, হাসপাতালে ১৮ জন শিশু শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসার পর একজন মারা যায়। অন্য শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে এ সমস্যা হয়েছে বলে রোগীদের সাথে আসা লোকজন জানিয়েছে। দুই শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান সিকদার জানান, শিশু মিশন নূর নাহিদের মৃত্যুর ঘটনায় তার চাচা আহসান উল্যা আটজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় এজাহারভুক্তদের মধ্যে মাদ্রাসার ছয় শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগে থানায় আনা হয়েছিল। এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার বিকালে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৩আগস্ট/এলএ)