স্কুল বন্ধ: শ্রম বিক্রিতে ব্যস্ত শিশুরা
প্রাণঘাতী করোনায় দীর্ঘদিন যাবৎ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় বিভিন্ন কল-কারখানা, মোটরসাইকেল গ্যারেজ, চায়ের দোকান, হোটেল রেস্তোরা ও ব্যাটারিচালিত অটোভ্যানের চালকসহ দিনমজুরের কাজ করছে শিশুরা।
শিশুরা বলছে, করোনায় দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ আছে। এ কারণে বিভিন্ন কারখানা, গুদাম, গ্যারেজ, দোকানপাট ও অটোভ্যানসহ দিনমজুরের কাজ করছে তারা। এসব কাজ করে যে টাকা পায় তা দিয়ে পরিবারের অভাব পূরণের পাশাপাশি নিজেদের ‘পকেট খরচ’ চলে। তাছাড়া দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনাতেও মন বসছে না আর।
উপজেলার মহিপুর এলাকায় মেসার্স ফিরোজ ট্রেডার্স নামে একটি পাটের বস্তার গুদামে গিয়ে দেখা যায় ১৫/২০ জন শিশু বস্তা সেলাইয়ের কাজে ব্যস্ত। তারা সবাই তৃতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাজ করছেন দিনমজুর হিসেবে।
উপজেলার মহিপুর মাওলানা ভাসানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র হোসাইন বলেন, ‘অনেক দিন থেকে স্কুল বন্ধ আছে। পড়শোনায় তেমন আর মন বসে না। এখানে বস্তা সেলাইয়ের কাজ করছি। সারা দিনে ৪০/৫০টি বস্তা সেলাই করি। এর জন্য গুদামের মালিক আমাকে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা দেয় দিনে।’
একই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সিয়াম হোসেন বলেন, ‘মা-বাবা দুজনই গরীব। এজন্য আমিও এখানে বস্তা সেলাইয়ের কাজ করি।’
মহিপুর হাজী মহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মোস্তাকিম মন্ডল বলেন, ‘যতদিন স্কুল বন্ধ আছে ততদিন এখানে কাজ করছি। সারাদিনে বস্তা সেলাই করে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা মজুরি পাই। তা দিয়ে পরিবারের অভাব পুরনের পাশাপাশি আমার পকেট খরচ চলে।’
এদের মতো এমন শত শত শিশু উপজেলার বিভিন্ন কল-কারখানা, গুদাম, গ্যারেজ, দোকানপাট ও অটোভ্যানসহ কৃষি কাজও করছে।
এলাকাবাসী বলছে, এই যে শিশুরা উপার্জনে নেমেছে, পরে তাদের স্কুলে ফিরিয়ে আনতে অনেকটা কাঠখড় পুড়তে হবে।
(ঢাকাটাইমস/৫আগস্ট/এসএ/কেএম)