পৃথিবীর তাবৎ কবি’র নিবেদন

প্রকাশ | ০৫ আগস্ট ২০২১, ১৬:৫৫

ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া

আকাশের বুক চিড়ে নীল রঙ এনে আমি

ঢেলেছি সাগরের বুকে;

নীল জলে যাতে তুমি করতে পারো সমুদ্রস্নান,

বেদনার নীল থেকে এভাবেই হবে তোমার নব-উত্থান।

চাঁদের শরীরে বয়ে যাওয়া উত্তাল জ্যোৎস্নাসাগর থেকে

আমি রূপোলি রঙ তুলে এনে ছড়িয়ে দিয়েছি

সমুদ্র সৈকতের চিকচিক সিকতা সাগরে;

যাতে ওরা চুমকির মত ঝিকিমিক করে তোমার সিক্ত  শরীরে।

 

মিটিমিটি তারাদের কাছ থেকে আলোর ফুলকি এনে

আমি এঁটে দিয়েছি জোনাকির গায়;

যাতে তুমি অভিসারে এসে পথহারা হয়ে শেষে

বনানীতে পেয়ে যাও হারানো পথের সন্ধান।

মেঘেদের বুক থেকে আমি তুলে এনেছি সাতরঙা রামধনুর

রঙের বাহার,

আবেগের রঙে মেশে তুমি যাতে হতে পারো

অনুরাগের রঙে একাকার।

 

দখিনা হাওয়ায় ভাসে বসন্ত ফুলের যতো সৌরভ,

কোকিলের যতো কুহু, পাখিদের যতো কলরব;

মুঠো ভরে তোমার জন্যে আজ এনেছি সে-সব,

তুমি যাতে হতে পারো আমার মনের ক্যানভাসে আঁকা

সেই বসন্ত বালিকা

যার আছে প্রজাপতি পরির মতো ঝিলিমিলি পাখা,

ভাবের আকাশে যে হতে পারে মুক্ত বলাকা।

অরুণের কাছ থেকে তোমার জন্যে এনেছি

শিরায় শিরায় উত্তাপ জাগানোর অব্যর্থ নিদান;

অস্তাচলের কাছ থেকে এনেছি

তোমার গালের টোলের লাজের লালিমার বরদান।

 

নায়াগ্রা ঝর্ণা থেকে তোমার গানের জন্যে এনেছি

ঝরো ঝরো সারগামের স্নেহার্দ্র ছন্দতাল লয়,

যে সুরের উত্তাপে অভিমানের সকল বরফ গলাবে

হিমাঙ্কের কুম্ভকর্ণ বসন্তের প্রতিপক্ষ হিমালয়।

এই কবোষ্ণ নিবেদনে

ফেরেবির নেই কোনো তিলমাত্র গোঁজা-মিল,  

কারণ এ আয়োজনে

পৃথিবীর তাবৎ কবি হয়েছে শামিল।