প্রযোজক রাজকে নিয়ে যা জানালেন র‌্যাব মুখপাত্র

প্রকাশ | ০৫ আগস্ট ২০২১, ১৮:৩২ | আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২১, ১৯:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

র‌্যাবের হাতে আটক প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজ ব্যবসার পাশাপাশি চলচ্চিত্র জগতে বিচরণ করেন ২০১৪ সালে। এরপর সঙ্গে পরিচয় হয় পরীমনির। রাজের হাত ধরেই পরীমনি মাদক সেবনে জড়িয়ে পরেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে র‌্যাব সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এলিট ফোর্সটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার মঈন বলেন, ‘রাজ মাল্টিমিডিয়ার’ কর্ণধার নজরুল ইসলাম রাজের শোবিজ জগতে ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০১৪ সালে। এর আগে তার কোনো মাল্টিমিডিয়া ছিল না। ২০১৪ সালের পর নাটক ও সিনেমা প্রযোজনা শুরু করেন। তার রাজ মাল্টিমিডিয়ার অফিসকে তিনি অনৈতিক কার্যক্রমে ব্যবহার করতেন। আমাদের অভিযানে আমরা সেরকম অনেকগুলো পর্নোগ্রাফির কনটেন্ট জব্দ করেছি।’

র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, ১৯৮৯ সালে খুলনার একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাসের পর ঢাকায় গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন রাজ। এরপর বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য ও ঠিকাদারি কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি শোবিজ জগতে বিভিন্ন সিনেমা ও নাটকে নানা চরিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনায় যুক্ত হন। ‘রাজ মাল্টিমিডিয়া’ নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠার খোলার পর ব্যবসায়িক জগত ও চিত্রজগতের দুই ক্ষেত্রে সংযোগ থাকায় অতিরিক্ত অর্থলাভের আশায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিজ অবস্থানের অপব্যবহার করেন। গতকাল গ্রেপ্তার শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান এবং মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসানের সহযোগিতায় ১০/১২ জনের একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেন তিনি। সিন্ডিকেটটি রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় বিশেষ করে গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় পার্টি বা ডিজে পার্টির নামে মাদক সেবনসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা করতো। পার্টিতে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে সিন্ডিকেট সদস্যরা বিপুল অর্থ পান। অংশগ্রহণকারীরা সাধারণত উচ্চবিত্ত অভিজাত পরিবারের সদস্য। প্রতিটি পার্টিতে ১৫-২০ জন অংশগ্রহণ করতো। এছাড়া সিন্ডিকেটটি বিদেশেও প্লেজার ট্রিপের আয়োজন করতো।’

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘উচ্চবিত্ত প্রবাসীদের জন্যেও দুবাই, ইউরোপ ও আমেরিকায় এ ধরনের পার্টির আয়োজন করা হত। পার্টি আয়োজনের ক্ষেত্রে আগত ব্যক্তিদের চাহিদা ও পছন্দের গুরুত্ব দিয়ে পার্টি আয়োজন করতো।

গ্রেপ্তার রাজের সিন্ডিকেট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপব্যবহার করে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় অগ্রসর হতেন ও স্বার্থ চরিতার্থ করতেন। নজরুল ইসলাম রাজের ‘রাজ মাল্টিমিডিয়া’ কার্যালয়টি অনৈতিক কাজে ব্যবহৃত হতো।’

জিজ্ঞাসাবাদে রাজ র‌্যাবকে জানিয়েছে, এমন অবৈধ আয় থেকে অর্থ নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যবসায় আমদানি, ড্রেজার বালু ভরাট ও ঠিকাদারী ও শোবিজ জগতে বিনিয়োগ করেতেন। এসব ব্যবসায় বেশ কয়েকজন অবৈধ অর্থের যোগানদাতাদের সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেছেন। গ্রেপ্তার প্রত্যেকের ব্যবসায়িক কাঠামোতে অস্বচ্ছতা রয়েছে।

রাজ চক্রের মাধ্যমে কোন কোন মডেল ডিজে পার্টিতে অংশ নিতেন বা জড়িত সম্পর্কে জানতে চাইলে মঈন বলেন, ডিজে পার্টিতে অংশ নেয়া বেশ ক’জন মডেলের নাম আমরা জেনেছি গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে। তথ্যগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। পরবর্তীতে তদন্ত করে জানানো হবে।

র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, রাজ নিজেরই মাদকের সরবরাহকারী। তার বাসায় বিপুল মাদক পেয়েছি। রাজ ছাড়াও আরও কয়েকজনের নাম আমরা পেয়েছি। তাদের সবার সম্পর্কেই তদন্ত করা হবে।

গ্রেপ্তার রাজের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি মাদক আইনে একটি মামলা করা হচ্ছে। এছাড়া বাসা ও মোবাইলে কিছু ডিজিটাল কনটেন্ট পাওয়ায় (যা অন্যদের বিরুদ্ধে ও নিজের স্বার্থে ব্যবহার করা হতো) রাজ ও তার সহযোগী মো. সবুজ আলীর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হবে।’

ঢাকাটাইমস/৫আগস্ট/এসএস/এমআর