কামরাঙ্গীরচরে এক ব্যক্তিকে পুড়িয়ে হত্যার কারণ জানাল পুলিশ

প্রকাশ | ০৫ আগস্ট ২০২১, ২২:১২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে ঘরের ভেতর দগ্ধ অবস্থায় তরিকুল ইসলাম খোকন নামে যে ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তার মৃত্যুর কারণ জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, সমকামিতার জন্য জোরাজুরি করায় সাব্বির নামে এক যুবক তাকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সাব্বির।
বৃহস্পতিবার রাতে ডিএমপির একটি সূত্র ঢাকাটাইমসকে এ তথ্য জানায়।  
কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গত ৩০ জুলাই শুক্রবার রাতে তরিকুল ইসলাম খোকনকে হত্যা করা হয়। পরে লাশের উপরে আগুন দিয়ে চলে যান ঘাতক। এ ঘটনায় নিহতের ভাই অজ্ঞাতনামা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গত ৩১ জুলাই কামরাঙ্গীরচর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটির  তদন্ত শুরু করে কামাঙ্গীরচর থানা পুলিশ।
কামাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকাটাইমসকে জানান, ওই মামলা তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তকে শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে গত ৩ আগস্ট মঙ্গলবার  সন্ধ্যায় কামাঙ্গীরচর থানার রসুলপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাব্বিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময়ে নিহত খোকনের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ও রক্তমাখা লুঙ্গি ও শার্ট উদ্ধার করা হয়।
ডিএমপির ওই সূত্রটি ঢাকাটাইমসকে জানায়, সাব্বির ও খোকন আগে থেকে পরিচিত। তিনি প্রায়ই খোকনের বাসায় আসা যাওয়া করতেন। গত ৩০ জুলাই রাতে সাব্বির নিহত খোকনের বাসায় রাতে থাকার জন্য  যান। তারা দুইজনেই এক বিছানায় একসাথে ঘুমান। রাতে খোকন অপ্রকৃতস্থ কামলালসা চরিতার্থ করার জন্য সাব্বিরকে জোরাজুরি করেন। এতে সাব্বির ক্ষিপ্ত হয়ে রান্না ঘর  থেকে শীল-পাটা নিয়ে আসেন। পরে খোকনের কপাল, নাক ও মুখে আঘাত করেন। ফলে খোকনের শরীর থেকে রক্ত বের হতে থাকে। এরপর ব্লেড দিয়ে খোকনের পেট কেটে সাব্বির তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
কামাঙ্গীরচর থানার ওসি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, খোকনের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বাসার ড্রয়ার থেকে কাপড়, চোপড় ও প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বের করে তার গায়ের উপর রাখেন। পরবর্তীতে ম্যাচ দিয়ে খোকনের শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে চলে যান। যাওয়ার সময়ে গ্রেপ্তারকৃত সাব্বির খোকনের দুইটি মোবাইল ও নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে যান।
মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত সাব্বির নিহত খোকনের একটি মোবাইল চার হাজার টাকায় বিক্রি করে সিলেট চলে যান। পুলিশের অভিযানের তৎপরতা দেখে সিলেট থেকে তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর চলে যান। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ শরীয়তপুরে অভিযান চালায়। পুলিশের অভিযানের মুখে অভিযুক্ত সাব্বির ঢাকায় চলে আসেন। গ্রেপ্তারকৃত সাব্বিরকে আদালতে পাঠালে তিনি ঘটনার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।
ঢাকাটাইমস/০৫ আগস্ট/এএ/ইএস