পাহাড়ে ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে ছড়া কচু

মোবারক হোসেন, খাগড়াছড়ি
 | প্রকাশিত : ০৮ আগস্ট ২০২১, ১৭:৪২

খাগড়াছড়ি জেলায় ব্যাপকভাবে ছড়া কচুর চাষ হচ্ছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম, ফেনী ও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করা হচ্ছে পাহাড়ে উৎপাদিত এই ছড়া কচু। পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া ছড়া কচু চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় এ অঞ্চলে এ ফলনও ভালো হয় বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। পুরো জেলায় ৮৫৮ হেক্টর জায়গায় এ কচু চাষ হচ্ছে। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ২৭২ মেট্রিক টন।

পাহাড়ে ছড়া কচুর আরেক নাম গুড়া কচু। দেশের অনেক জায়গায় এই কচুর নাম মুখী কচু। তবে কোথাও কোথাও কুড়ি কচু, দুলি কচু ও বন্নি কচু ইত্যাদি নামে ও পরিচিত। এটি খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এতে প্রচুর পরিমাণ শ্বেতসার, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ফসফরাস এবং ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ আছে।

খাগড়াছড়ির গুইমারার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের গৈছড়ির এলাকার কৃষক সোনাধন চাকমা জানান, ছড়া কচু চাষ করে লাভবান হয়েছেন তিনি। ৪/৫ বছর ধরে এই কচু চাষ করেন তিনি। এ বছর পাঁচ কানী জায়গায় পাহাড়ের ঢালুতে চাষ করেছেন এই কচু। গত বছর সাড়ে তিন কানি জমিতে চাষ করেছিলেন চলতি বছর ৪০ মণ বীজ রোপণ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে পৌনে দুই লাখ টাকা। ফলন ভালো হবে বলে আশাবাদী তিনি।

এই কৃষক জানান, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক হতে তিনি ঋণ নিয়েছেন কচু চাষের জন্য। পুজিঁ উঠিয়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

একই এলাকার উদ্দিপন চাকমা জানান, তিনি ৩০ হাজার টাকা খরচ করে পাঁচ মণ ছড়া কচু বীজ রোপণ করেছেন। তিনি প্রতিবছরই এই কচু চাষ করে বেশ লাভবান।

গত এক দশকে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার হাত ধরে বিকশিত হয়েছে কচুমুখী বা ছড়া কচু। তারই ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়ি জেলায় অনাবাদী পাহাড়ি পতিত জমিতে কচু চাষ করছেন বহু কৃষক।

লক্ষীছড়ির কৃষি কর্মকর্তা (ভা.প্রা.) সোহরাব হোসেন ভূইয়া বলেন, উপজেলায় প্রায় ৪৮ হেক্টর জায়গায় এ কচু চাষ হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ১৯ থেকে ২০ মেট্রিক টন। এর বাইরেও অনেক কৃষকরা কচু চাষ করছেন। পারিবারিক পুষ্টিবাগান প্রকল্পের আওতায় আমাদের তিনটি প্রদর্শনী প্লট রয়েছে। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। ফলন আসতে প্রায় ৬-৭ মাস সময় লাগে।

খাগড়াছড়ি জেলা কৃষি সম্প্রসরাণ বিভাগের উপ-পরিচালক মর্ত্তুজ আলী জানান, পুরো জেলায় ৮৫৮ হেক্টর জায়গায় এ কচু চাষ হচ্ছে। ফলনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ২৭২ মেট্রিক টন। সারাদিন রোদ থাকে এমন স্থানে মুখীকচু রোপণ করলে ভালো হয়। দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটি মুখীকচু চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। তবে জমিতে প্রচুর পরিমাণ জৈব পদার্থ থাকা উচিত। এ ফসলের জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু প্রয়োজন।

তিনি আরও জানান, একবার চাষ করলে জমির উর্বরতা কমে যায় এটা সঠিক, তবে প্রচুর পরিমাণ জৈব সার ব্যবহার করে পরের বছর কচু চাষ উপযোগী করে তুলতে হবে। পানি সেচের ব্যবস্থা থাকলে ফাল্গুন মাস (ফেব্রুয়ারি) বীজ বপনের সবচেয়ে ভালো সময়। কিন্তু যদি সে সুযোগ না থাকে তাহলে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হবে এবং প্রথম বৃষ্টিপাতের পরপরই বীজ লাগিয়ে ফেলতে হবে। তবে বৈশাখের পর (এপ্রিলের পর) বীজ লাগালে ফলন খুব একটা ভালো হবে না।

(ঢাকাটাইমস/৮জুলাই/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :