ভাইয়ের নির্যাতনের বিচার চেয়ে সাবেক পুলিশ সদস্যের আকুতি

নড়াইল প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ আগস্ট ২০২১, ১৭:৫৪

নড়াইলে ভাইয়ের ‘সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও অত্যাচার নির্যাতনের’ বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আশরাফ আলী। জেলার কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার বিলাফর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক পুলিশ সদস্য আশরাফ আলী শনিবার দুপুরে নড়াইল জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আপন ভাই হান্নান খাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অত্যাচার-নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরেন।

বক্তব্যে আশরাফ আলী বলেন, তার ভাই হান্নান খাঁ দুর্ধর্ষ প্রকৃতির সন্ত্রাসী। তিনি নিজের ছেলে রবিউল খাঁ, হারুন খাঁ ও বশির খাঁকে নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য সৎ ভাইদের উপর সন্ত্রাসী হামলা করে এলাকা ছাড়া করেছেন। আপন ভাইদের অধিকাংশ জায়গা জমি জোর করে দখলে নিয়েছেন।

আশরাফ আলীর ভাষ্য, সামান্য যা কিছু সম্পত্তি আছে তাও দখলের চেষ্টা করছেন হান্নান। বাধা দিতে গেলে ছেলেদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন বলে অভিযোগ তার।

আশরাফ ক্ষোভের সঙ্গে জানান, তাদের এলাকা ছাড়া করার জন্য তাদের উপর নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছে। সম্প্রতি ঘের থেকে জোরপূর্বক মাছ ধরে নেয়ার সময় বাধা দেয়ায় হান্নান খাঁ ছেলেদের নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এমনকি তার (আশরাফ আলীর) ১০ম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলেকে পর্যন্ত কুপিয়ে আহত করে। এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করায় ভয়ে কেউ তাদের কিছু বলে না।

পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী আশরাফ বলেন, ‘বার বার অভিযোগ দিলেও নড়াগাতী থানার ওসি রোকসানা খাতুন তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। এতে অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের বিরূদ্ধে নড়াগাতী ও তেরোখাদা থানায় অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় তারা এক থানার মধ্যে অপরাধ করে অন্য থানা এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। উভয় পাশের সন্ত্রাসী নেতাদের সঙ্গে তাদের গভীর সখ্যতা রয়েছে।’

হান্নান খাঁ এর পাঁচজন স্ত্রীর মধ্যে একজন থাকেন ভারতের মুম্বাই। এলাকায় থাকে তিনজন। অপকর্ম করে ধাওয়া খেয়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থেকে নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে পরিচয় দেয়ার জন্য নিজেকে মোয়াজ্জিন পরিচয় দেন।

আশরাফের ভাষায়, ‘লেবাসধারি ভন্ড হান্নান খাঁ-র সহযোগী বড়নালের বাবুল ও কুন্দপুরের জুয়েল ক্রস ফায়ারে মারা গেলে তাদের রেখে যাওয়া সব অস্ত্র হান্নান খাঁর নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এ কারণে হান্নান আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। মেয়ে শারমিনকে দিয়ে সৎভাই, চাচাতভাইসহ অনেকের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও অর্থবাণিজ্য করেছেন।’

আশরাফ আলী বলেন, ‘মেয়ে শারমিনকে প্রায় ডজনখানেক বিয়ে দিয়ে যৌতুক ও নির্যাতন মামলা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন হান্নান খাঁ। তিনি শুধু ভাই-বোনদের উপর অত্যাচার করেননি, এলাকার নিরীহ লোকজনের উপর অত্যাচার-নির্যাতন করা, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে হান্নানের বিরুদ্ধে।’

ক্ষতিগ্রস্থ আশরাফ আলী সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হান্নান খাঁর ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নির্যাতনের’ বিচার দাবি করেছেন।

বিভিন্ন অভিযোগের ব্যাপারে হান্নান খাঁর কাছে জানতে চাইলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন আশরাফ আলী।

নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকসানা খাতুন বলেন, ‘হান্নান খাঁ ও আশরাফ খাঁ পরস্পর ভাই। তাদের মধ্যে জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধ আছে বিধায় তাদেরকে আদালতে যেতে বলা হয়েছে। আর যদি কোনো ফৌজাদারী অপরাধের ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ দেন, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/৮আগস্ট/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :