মৃত্যুপথযাত্রী ছেলে, লুকিয়ে কাঁদেন বাবা

চাটমোহর (পাবনা)
ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২১, ২০:০৫ | প্রকাশিত : ০৯ আগস্ট ২০২১, ১০:৪৯

সমবয়সীরা যখন খেলাধুলা করে, তখন অদূরে বসে বুক চেপে ধরে কাঁদে ১১ বছরের আবদুল্লাহ। তীব্র ব্যথায় নির্ঘুম রাত কাটে হৃদপিণ্ডের ভাল্ব নষ্ট হওয়া ছেলেটির। তাকে বাঁচাতে চিকিৎসক দ্রুত অপারেশন করাতে বলেছেন। এতে লাগবে প্রায় তিন লাখ টাকা। কিন্তু দিনমজুর বাবার সে সামর্থ নেই। তাই ছেলের জন্য লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদের পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা সরদারপাড়া গ্রামের দিনমজুর রাজ্জাক মোল্লা। ছেলের এমন করুণ পরিণতিতে পাগলপ্রায় মা রাশিদা খাতুন।

সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয় আবদুল্লাহ্। ভাঙাচোরা একটি টিনের ঘরে বসবাস পরিবারটির। গ্রামে শিশুরা যখন খেলাধূলা করে তখন পাশে বসে কাঁদে শিশু আবদুল্লআহ্। দৌঁড়াদৌড়ি করলেই শ্বাস নিতে কষ্ট হয় তার।

পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাস দুয়েক আগে খেলার সময় হঠাৎ করেই মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারায় আবদুল্লাহ্। শুরু হয় বমি। অসুস্থ ছেলেকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান বাবা রাজ্জাক মোল্লা। কিন্তু পল্লী চিকিৎসক দেন অ্যাসিডিটির চিকিৎসা। কয়েকদিন যাওয়ার পর রোগ না সারায় ধারদেনা করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান দরিদ্র বাবা। সেখানে শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ বেলাল উদ্দিন দেখে বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষা দেন। এরপর চিকিৎসক জানান, আবদুল্লাহর হার্টের ভাল্ব নষ্ট হওয়ার পথে। দ্রুত ঢাকায় নিয়ে অস্ত্রোপচার করলে সুস্থ হবে। এর জন্য ব্যয় হতে পারে দুই থেকে তিন লাখ টাকা।

আবদুল্লাহর পরীক্ষা নীরিক্ষার কাগজপত্র চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আরমিলা আক্তার ঝুমিকে দেখালে তিনি বলেন, শিশুটির হার্টের ভাল্বে সমস্যা হয়েছে। দ্রুত অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। এর জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে। দ্রুত চিকিৎসা না করালে আবদুল্লাহ্কে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়বে বলেও জানান তিনি।

কিন্তু দুই মাস পরও চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে পারেননি অসহায় বাবা রাজ্জাক মোল্লা। আস্তে আস্তে অসুস্থতা বাড়ছে শিশুটির। ছেলে এবং পরিবারের অন্যরা কষ্ট পাবে বলে বাড়ির বাইরে গিয়ে অঝোরে কাঁদেন বাবা রাজ্জাক মোল্লা।

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ্ কিছুদিন আগেও হাসি ঠাট্টা, খেলাধুলায় মেতে থাকতো। অথচ এখন সে বুক চেপে ধরে কাঁদে। চুপ করে থাকে। দিনমজুরি করে যা উপার্জন করি সেটা দিয়ে সংসার চলে না। ঘরের জায়গাটুকু ছাড়া কোনো সম্বল নেই। এখন করোনার কারণে কাজও কম। এতো টাকা পাব কোথায়?

অশ্রুসিক্ত নয়নে মা রাশিদা খাতুন বলেন, গরিবের ঘরে এমন অসুখ আল্লাহ কেন দেন? অনেক কষ্টে চার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সংসার চললেও কখনও কারো কাছে হাত বাড়াইনি। অভাব থাকলেও সুখেই ছিলাম। কিন্তু ছেলের এমন রোগের কথা শুনে এবং টাকার জোগাড় করতে না পেরে এখন রাতের ঘুম আর হয় না! কেউ কি নাই যার একটু সহায়তার বাঁচতে পারে আমার বুকের ধন?

কারও সামর্থ থাকলে আবদুল্লাহর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন তার বাবার এই ফোন নম্বরে। ০১৭৮৬৩৯৬৪১৯ (বিকাশ) ।

(ঢাকাটাইমস/০৯আগস্ট/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :