অস্ট্রেলিয়ার লনসেস্টনে প্রবাসীদের চড়ুইভাতি আয়োজন

ইয়াসিন এলাহী, তাসমানিয়া (অস্ট্রেলিয়া) থেকে
 | প্রকাশিত : ১৬ আগস্ট ২০২১, ১৪:১৬

অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া রাজ্যের লনসেস্টনে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে গত শনিবার জাঁকজমকপূর্ণ ঈদ পুনর্মিলনী ও চড়ুইভাতির আয়োজন করা হয়েছে। ‘বাংলাদেশি কমিউনিটি ক্লাব ইন লনসেস্টন, অস্ট্রেলিয়ার (বিসিসিএল)’ উদ্যোগে স্থানীয় দৃষ্টিনন্দন মোবরে গলফ ক্লাব অডিটোরিয়ামে এ আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে পুরুষরা রঙ-বেরঙের পাঞ্জাবি, নারীরা শাড়ি ‍ও শিশুরা দেশীয় ঐতিহ্যবাহী বিভিন্নি পোষাক পরে উপস্থিত হন। দেশীয় পোষাক, সংস্কৃতি, কথাবার্তা, স্মৃতিচারণ, কৌতুক, খুনসুটি, খাবার-দাবারের বাঙালি আবহ মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বুকে ক্ষণিকের জন্য যেন একখণ্ড বাংলাদেশ রচিত হয়েছিল। বিকালে শুরু হয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও চড়ু্ইভাতি ডিনারের মধ্য দিয়ে রাত ১২টায় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য, অংশগ্রহণকারীদের পরিচয় পর্ব শেষে কমিটির সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনায় দেশের ঈদ, শৈশব-কৈশোর, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন, চাকরির অভিজ্ঞতা, নানা স্মৃতিচারণ, বাংলাদেশের সমস্যা-সম্ভাবনা, কোভিড পরিস্থিতি ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাম্প্রতিক বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে চলছিল দেশীয় বিভিন্ন ধরনের পিঠা-পুলি, মিস্টি, দই, সন্দেশ, মিস্টান্ন, চা-কফি ও স্ন্যাকস খাওয়ার হিড়িক। এতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আমন্ত্রণে ভারতীয় বাঙালি ও স্থানীয় অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকরাও বাংলাদেশি পিঠা-পুলি ও মিষ্টান্ন ভোজে অংশ নিয়ে দেশীয় বৈচিত্র্যময় খাবারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

স্মৃতিচারণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে থাকে বাংলা সংস্কৃতিক ধারক ক্লাসিকাল নৃত্য ও গান। মাতৃভূমি থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে প্রবাসে স্মৃতিকাতর ঈদ উদযাপনে অংশগ্রহণকারীরা দেশ ও প্রবাসের স্মৃতিচারণ, আড্ডা-আনন্দ, ছবি তোলা, হাঁসি-ঠাট্টা, কৌতুক ও হৈ-হুল্লোড়ের সঙ্গে যখন সময় উপভোগ করছিলেন। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তখন চলছিল অনুষ্ঠানস্থলে চড়ুইভাতি স্টাইলে বহু পদের দেশীয় রাতের খাবারে তৈরি আয়োজন। টানা তিন ঘন্টার বিশাল কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে চড়ুইভাতি রান্নার কাজ শেষ হয়।

এরপর নারীদের জন্য আয়োজন করা হয় সবচেয়ে মজার বালিশ খেলার। এ খেলায় যথাক্রমে প্রথম হন নিঝুম আলমগীর, দ্বিতীয় আফসানা মিতু ও তৃতীয় হন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ম্যারিয়ন। আনন্দ-আড্ডা ও নানা রকম টেবিল গেমে অংশগ্রহণ শেষে বিদেশিদের সঙ্গে নিয়ে সবাই পুরান ঢাকাই স্টাইলে তৈরিকৃত নানান পদের দেশীয় খাবার দিয়ে রাতের ভূরিভোজ সেরে নেন।

পুনর্মিলনী ও চড়ুইভাতি আয়োজন সম্পর্কে লনসেস্টনে পা রাখা প্রথম বাংলাদেশি ড. মো. নুরুল আমিন বলেন, “সবাইকে নিয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে প্রবাস জীবন উপভোগের চিন্তা থেকেই আমরা বিসিসিএল প্রতিষ্ঠা করি। এ প্রোগ্রামগুলো আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করে।”

আয়োজন সম্পর্কে তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. টিএম রবিউল ইসলাম বলেন, “প্রবাসে নিরানন্দ ঈদ পালনের একঘেয়েমিতাপূর্ণ অভিজ্ঞতা থেকে লনসেস্টনে বসবাসরত বাংলাদেশীদের বের করে আনতেই প্রতিবছর আমরা এমন আয়োজনের ব্যবস্থা করে থাকি। সবাই আয়োজন উপভোগ করেন।”

সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ ইসলাম রনি বলেন- “প্রবাসে প্রতিদিন আমরা দেশকে মিস করি। পুনর্মিলনী ও চড়ুইভাতির মধ্য দিয়ে আমরা একে অন্যের কাছে আসার সুযোগ পাই। এ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। তাই এ আয়োজন। আশা করছি সংগঠন এমন আয়োজন সর্বদা অব্যাহত রাখবে।”

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা হলেন- মো. নুরুল আমিন, টিএম রবিউল ইসলাম, এসএম নুরুজ্জামান মানিক, মো. কামরুজ্জামান, সরফুদ্দিন খান সাদ, সাইয়েদা সুলতানা শম্পা, রাইসা তসলিম, নুসায়বা তাবাসসুম এশা, মইনুল আহসান, আলমগীর হোসেন, বিজু আহমেদ টিপু, ফৈাজিয়া আহমেদ, নুসরাত খান, রিয়াদ হোসেন রনি, খন্দকার রাসেল হাসান, তানজিন খান রিয়া, আনিক হোসাইন খান, তাইবা তাইবা, ফাইয়াজ উল হক, শাহরিয়ার বাঁধন, নিশাত জামান, সাফকাত সানি, মিশকাত আদর, ফারজানা সাত্তার, অনিক আহসান, শামীমা সুলতানা সেতু, ইয়াছির আরাফাত, তাহসিবা নূর, কাজী ইফতেখার, জমিলা খাতুন ঝিনুক, মাশুকা তাবাসসুম ও কাজী আসাফসহ সংগঠন অন্যান্য সদস্যগণ।

সবশেষে বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রণকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে আয়োজন সমাপ্ত হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

প্রবাসের খবর এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :