ভেজা চুলে ঘুমালে যে ক্ষতি

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট ২০২১, ১২:২৫

সুন্দর চুল শুধু আলাদা সৌন্দর্যই বহন করে না, যে কোনো চেহারায় সার্বিক প্রভাবও ফেলে। বিশেষ করে মেয়েরা নিজের সৌন্দর্য বাড়াতে বহু যত্ন আত্তি করে চুল বড় করতে আগ্রহী হন। কিন্তু চুলের যত্ন ঠিকমতো না করলে অকালে চুল পড়ে যেতে পারে।

অনেকে তাড়াহুড়া করে গোসল সেরে চুল না শুকিয়েই সেই ভেজা চুল নিয়েই রাতে ঘুমোতে চলে যান। আবার সকালে গোসল করলেও সেই ভেজে চুলেই দিবানিদ্রা সারেন। আসলে আমাদের অনেকেরই ভেজে চুলেই ঘুমিয়ে পড়ার প্রবণতা আছে। ভেজা চুল নিয়ে ঘুমালে চুলের যেসব ক্ষতি হয় জেনে নিন।

ভেজে চুলে ঘুমোলে চুলে প্রচুর জট পড়ে এবং তা থেকে চুল পড়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়।

ভেজে চুলে ঘুমালে চুল থেকে বাজে গন্ধ বের হয়। কারণ ঘুমানোর সময় চুলের ত্বক স্বাভাবিকভাবেই ঘেমে যায়। তার উপর চুলের ত্বক যদি ভেজে থাকে, তাহলে পানি ও ঘাম মিশে একধরনের দুর্গন্ধ তৈরি হয়। পরে চুল শুকিয়ে গেলেও কিন্তু এই দুর্গন্ধ থেকেই যাবে।

ভেজে চুল বালিশে অনবরত ঘষা লাগার কারণে চুল তার স্বাভাবিক কোমলতা হারায়, ফলে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। তাই চুল নমনীয় ও কোমল রাখতে ভেজে চুলে শোওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন।

ভেজে চুলে ঘুমালে ছত্রাক সংক্রমণ ঘটতে পারে। মাথার ত্বক ভিজে ও স্যাঁতেসেঁতে থাকায়, তা থেকে ছত্রাক সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়। এছাড়া এই রকম ভেজে চুলে ঘুমালে মাথার ত্বকে খুশকির সমস্যাও বাড়তে পারে।

করণীয়

সম্ভব হলে রাতে গোসলের অভ্যাস বাদ দিন। অন্তত চুল ভেজানো থেকে বিরত থাকুন। হালকা গরম পানিতে হাত-পা ও শরীর ধুয়ে নিলে কিছুটা সতেজ অনুভব করবেন।

যদি সম্ভব হয় তবে সকালে কিংবা সন্ধ্যার দিকে গোসল সেরে চুল দ্রুত শুকিয়ে নিন। কোনোভাবেই ভেজা চুল নিয়ে ঘুমাতে যাবেন না।

অনেকে আরামের জন্য বালিশে সুতির কভার ব্যবহার করেন। তবে চুল ভালো রাখতে চাইলে সুতির বদলে ব্যবহার করুন সিল্কের কভার। এতে চুলে তুলনামূলক কম ঘষা লাগবে। ফলে চুল ছিঁড়ে কিংবা পড়ে যাওয়ার ভয় কমবে।

পেপার তোয়ালে ব্যবহার করুন। গোসলের পরই মাথায় তোয়ালে পেঁচিয়ে চুল শুকিয়ে নেওয়ার পদ্ধতিই অ্যাপ্লাই করেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন তোয়ালের চেয়েও অনেক বেশি পানি শোষণ করতে পারে পেপার তোয়ালে। তোয়ালে দিয়ে চুল ঘষলে চুলে ব্রেকেজের সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার ফলে চুল অকালে ঝড়ে যেতে পারে।

চুলের পুষ্টির জন্য অনেকেই সিরাম অ্যাপ্লাই করেন। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না যে, চুল তাড়াতাড়ি এবং ভালো করে শুকিয়ে নেওয়ার জন্য চুলে হেয়ার সিরাম অ্যাপ্লাই করাটা বিশেষভাবে জরুরি। এর ফলে চুলের জট খুব সহজেই ছেড়ে যায় এবং চুলের ভেতরে ভালো করে বাতাস চলাচল করতে পারে। ফলে চুল শুকোবেও তাড়াতাড়ি।

অনেকে গোসলের পর বাথরুমেই চুল শুকনো করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে আখেরে সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছুই হবে না। কারণ বাথরুমের আর্দ্রতার জন্য গোসলের পরেও সেখানে থাকলে চুল শুকোতে দেরি হতে পারে। এর জন্য বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে বাইরে বা পাখার হাওয়ায় চুল শুকিয়ে নিন।

চুল শুকানোর জন্য সবার আগে চুলের গোড়া শুকিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। কারণ চুলের গোড়ায় বসে থাকা জল শুকোতে অনেকটা সময় লাগে। এর জন্য চুলের গোড়ার পানি ভাল করে শুকিয়ে নিন। এর জন্য পাখার তলায় বসুন এবং বাড়িতে টেবিল ফ্যান থাকলে টেবিল ফ্যানের সামনে বসুন। এবার আঙুল দিয়ে চুলের গোড়াগুলো ফাঁক করে দিতে থাকুন। এর ফলে চুলের গোড়ায় সরাসরি হাওয়া ঢুকবে। আর গোড়া তাড়াতাড়ি শুকালে বাকি চুল শুকোতে বেশি সময় লাগবে না।

চুল শুকানোর সময় যে ভুলগুলো এড়িয়ে চলবেন

হেয়ার কেয়ার এক্সপার্টরা বলেন, পুরোপুরি ভেজা চুলে কখনো ড্রায়ার দেবেন না। চুল পাখার হাওয়ার ৮০ শতাংশ শুকিয়ে যাওয়ার পরই ব্লো-ড্রাই করুন।

একবারেই সমস্ত চুলে ব্লো-ড্রাই করার প্রবণতা অনেকেরই থাকে। কিন্তু সেটা করলে চুল কখনওই তাড়াতাড়ি শুকোনো সম্ভব নয়। চুল সর্বদা একাধিক ভাগে ভাগ করে নিয়ে পার্ট বাই পার্ট শুকিয়ে নিন। তাড়াতাড়ি হবে।

চুল শুকানোর জন্য তোয়ালে বা গামছা দিয়ে চুল ঝাড়েন অনেকে। কিন্তু বিশ্বাস করুন এতে চুলের পানি ঝড়লেও চুলের অনেক ক্ষতি হয়, চুল রাফ হয়ে যেতে পারে। তাই এমনটা কখনোই করবেন না।

ভেজা চুলে ঘুমালে চুল পড়ে। চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যায়। এতে সহজেই চুল পড়ার হার বৃদ্ধি পায়।

ভেজা চুল কখনোই আঁচড়াবেন না। ভেজা চুল আঁচড়ালে জটের কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় অন্তত দ্বিগুণ বেশি চুল পড়ে।

(ঢাকাটাইমস/১৯আগস্ট/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :