ফুল, অশ্রু ও শ্রদ্ধায় বিদায় বুলবুল চৌধুরী

প্রকাশ | ২৯ আগস্ট ২০২১, ১৩:০০ | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২১, ১৫:১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ফুল, অশ্রু, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় শেষবারের মতো বিদায় একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী।

 

মন্ত্রী, রাজনীতিক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, প্রকাশকেরা সমবেত হয়েছিলেন ‘টুকা কাহিনী’র স্রষ্টার বিদায় যাত্রায়।

 

কেউ ফুল দিয়ে, কেউবা চোখের জলে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রিয় লেখক ও মানুষকে। ভালোবাসার মানুষ, স্বজন বন্ধুরা এসেছিলেন ধীর পায়ে। দাঁড়িয়েছিলেন নিথর দেহের পাশে, সন্তর্পণে। অনন্তের ঘুমে যেন বিঘ্ন না ঘটে।

 

শনিবার সূর্যঅস্তবেলায় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে প্রয়াত হন বুলবুল চৌধুরী।  কর্কট রোগ বাসা বেঁধেছিল তাঁর দেহে। বাংলাবাজারে নিজ বাসাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

 

একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রান্তজনের কণ্ঠস্বর তাঁর লেখায় ধ্বনিত হয়েছে পরম মমতায়। ৭৩ বছর বেঁচেছিলেন। বিদায় বেলায় রেখে গেছেন স্ত্রী ও তিন ছেলেকে।

 

রবিবার সকালে বাংলাবাজারের প্যারীদাস রোডের শিমতলা মসজিদে প্রথম জানাজা হয় লেখকের। পরে বেলা সকাল ১১টায় শ্রদ্ধা নিবেদন ও দ্বিতীয় জানাজার জন্য মরদেহ আনা হয় বাংলা একাডেমিতে। মরদেহ রাখা হয় নজরুল মঞ্চে।

 

এখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। খ্যাতিমান কবি, কথাসাহিত্যিক, লেখক, প্রকাশকরাও উপস্থিত হয়েছিলেন বুলবুল চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।

 

ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় গুণী মানুষটিকে। পরে এখানেই  অনুষ্ঠিত হয় তাঁর দ্বিতীয় নামাজের জানাজা।

 

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুরে। সেখানে  মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাধিস্থ করা হয় তাঁকে।  

 

১৯৪৮ সালের ১৬ আগস্ট গাজীপুরের দক্ষিণবাগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বুলবুল চৌধুরী। লেখালেখির বাইরে পেশাগত জীবনে তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

 

বর্ষীয়ান এই কথাসাহিত্যিকের উপন্যাসগুলোর তালিকায় আছে ‘অপরূপ বিল ঝিল নদী’, ‘কহকামিনী’, ‘তিয়াসের লেখন’, ‘অচিনে আঁচড়ি’, ‘মরম বাখানি’, ‘এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে’, ‘ইতু বৌদির ঘর’ ও ‘দখিনা বাও’।

তাঁর আত্মজৈবনিক দুটি গ্রন্থের নাম ‘জীবনের আঁকিবুঁকি’ ও ‘অতলের কথকতা’। কিশোর রচনার মধ্যে রয়েছে, ‘গাঁওগেরামের গল্পগাথা’, ‘নেজাম ডাকাতের পালা’, ‘ভালো ভূত’ আর ‘প্রাচীন গীতিকার গল্প’।

 

সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২১ সালে তিনি একুশে পদকে সম্মানিত হন। এ ছাড়া  হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, জসীমউদদীন স্মৃতি পুরস্কার, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ব্র্যাক ব্যাংক সমকাল সাহিত্য পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৯আগস্ট/এজেড/এইচএফ)