কবিতা
শেষে কোথা নিয়ে যাবে
এ কেমন হৃদয় দিলে জাগে না সে প্রেমের সাড়ায়!
এ কেমন অশ্রু দিলে বুক জুড়ায় না জলের ধারায়!
এ কেমন বৃষ্টি দিলে বীজের বুকে জাগায় না প্রাণ!
এ কেমন ছন্দ দিলে তাল—লয়ে সে গায় না যে গান!
এ কেমন ভাই দিলে যে ভাইয়ের বুকে হানে ছুড়ি,
এ কেমন ভাষা দিলে কথায় তাতে নেই মাধুরি?
এ কেমন হাসি দিলে নিমেষে তার রেশটা মিলায়!
এ কেমন আশা দিলে হতাশাই দু:খ বিলায়।
এ কেমন কবি দিলে বলে না-যে আমার কথা!
কেবল কবি হবার জন্যে লেখে সে তার সব কবিতা।
এ কেমন বোধ দিলে যে বোধ হারিয় থাকি ঘোরে,
এ কেমন মেধা দিলে জেতে না যে যুক্তি-জোরে!
এ কেমন বাঁশি দিলে যেই বাঁশিতে কুৎসা ঝরে!
এ কেমন সখা দিলে পাই না আশিস তার অন্তরে!
এ কেমন লোভ দিলে হায় লাভের পাপে হলেম পাতক,
এ কেমন বঁধু দিলে বিশ্বাসে হয় প্রাণের ঘাতক।
এ কেমন হাত দিলে যে কসরতে হায় ভাত জোটে না,
এ কেমন ভাব দিলে যে ভাবের কলির ফুল ফোটে না!
এ কেমন ফুল দিলে যে পরাগ জুড়ে নেই যে সুবাস,
এ কেমন ব্যাধি দিলে ঘরে ঘরে জীবন বিনাশ!
এ কেমন প্রেম দিলে যে কোনোই মনে পায় না বাসা!
এ কেমন জল দিলে যে সাগর পানেও রয় তিয়াসা?
এ কেমন রূপ দিলে হায় খানিক বাদেই বলিরেখা!
এ কেমন পাঠ দিলে যে জীবন দানেও হয় না শেখা?
এ কেমন বোঁঝা দিলে পারি না আর বইতে কাঁধে!
এ কেমন মায়া দিলে মরীচিকার ধাঁধার ফাঁদে?
এ কেমন জীবন দিলে কলকাঠি রয় তোমার হাতে!
মাটির ঢিবিটার ভার বওয়াই রাখলে কেবল আমার খাতে।
এ কেমন জগত দিলে যেই জগতের সব অচেনা!
নিত্য দিনের ঘামের দামে শোধ হলো না কোনই দেনা।
এই যে কোথায় আসতে দিলে, অনিবার এই পরোয়ানা!
লোকান্তরে কোথায় যাবো; তুমিই জানো শেষ ঠিকানা।