‘সাংবাদিকতা পেশাকে যারা কলুষিত করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা'
সাংবাদিকতার পেশাকে যারা কলুষিত করছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এলিট ফোর্স র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
বুধবার বিকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই হুঁশিয়ারি দেন র্যাব মুখপাত্র। এর আগে হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত আব্দুল মালেককে অপহরণ করে কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের ঘটনায় অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।
চাঁদাবাজির ঘটনায় একটি টেলিভিশনের সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম ও তার সহযোগী ইকবাল হোসেনকে আটক করে র্যাব। তাদের কাছ থেকে ক্যামেরা ও বেসরকারি একটি টেলিভিশনের বুম, পাঁচ লাখ টাকা, তিনটি একশ টাকার স্টাম্প, দুটি ব্যাংকের (৪৫ লাখ ও ৫০ লাখ টাকার) চেক জব্দ করা হয়।
র্যাব জানায়, সাংবাদিকতার পরিচয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ও অপরাধীদের টার্গেট করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল একটি চক্র। মঙ্গলবার তারা আলোচিত হলমার্ক কেলেঙ্কারির মামলায় অভিযুক্ত আব্দুল মালেককে অপহরণ করে একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায়। পরে তার পরিবারের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। এসময় মালেকের পরিবারের কাছে থেকে নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও দুটি চেকের মাধ্যমে ৯৫ লাখ টাকা আদায় করা হয়। ভুক্তভোগী মালেকের পরিবারের অভিযোগের পরিপেক্ষিতে র্যাব উত্তরার একটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে। এছাড়া হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকায় ভুক্তভোগী আব্দুল মালেককেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
কথিত এসব ভুয়া সাংবাদিককে যারা নিয়োগ দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার সুযোগ দিচ্ছে সেই সম্পাদক-প্রকাশক ও মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে খন্দকার আল মঈন বলেন, 'সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এই প্রতারণার সঙ্গে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি যারা এই পেশাকে কলুষিত করছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তি তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
র্যাবের অভিযান টের পেয়ে ঘটনাস্থলে থাকা অনেকে পালিয়ে যায় বলেও জানান এই কর্মকর্তা। গ্রেপ্তারকৃতদের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, 'তাদের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় ছিল না। তারা বিভিন্নভাবে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়ে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করত। বিভিন্ন সময় নারীদের এনে ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।'
অপর প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, 'এই চক্রের সঙ্গে আরও ১০-১৫ সদস্য জড়িত বলে আমরা জানতে পেরেছি। তারা বিভিন্ন সময় ওঁৎ পেতে থাকে যাদের মধ্যে কোনো দুর্বলতা আছে তাদের টার্গেট করে ব্ল্যাকমেইল করত। ভিকটিম মালেকও একজন ওয়ারেন্টভুক আসামি হওয়ায় তাকে ব্ল্যাকমেইলের সুযোগ পায়।'
মালেককে যে আবাসিক হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেখানে প্রতিষ্ঠানটির কেউ জড়িত কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, 'প্রাথমিক জিজ্ঞাবাদে আবাসিক হোটেলের কয়েকজনের জড়িত থাকার তথ্য আমরা পেয়েছি। তবে আবাসিক হোটেলের নাম পরে জানানো হবে। যারা মালিক পক্ষ আছে তারা এটা আগেই বুঝতে পারেনি, যখন আমরা অভিযান পরিচালনা করতে গিয়েছি তখন তাদের এ বিষয়ে টনক নড়েছে।'
(ঢাকাটাইমস/০১সেপ্টেম্বর/এসএস/জেবি)