জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

জাভেদ হোসেন, গাইবান্ধা
 | প্রকাশিত : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬:৩৬

গাইবান্ধা সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের তিনটি আবাসিক ভবন ২৫ বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে গণপূর্ত বিভাগ। তবু ঝুঁকি নিয়েই তিনটি পরিবারের শিশুসহ অন্তত পনেরো জন সদস্য দীর্ঘদিন থেকে এই ভবনগুলোতে বসবাস করে আসছেন। অভিযোগ রয়েছে, দুই যুগের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও অদৃশ্য কারণে আজ অবধি ভবনগুলো ভেঙে ফেলার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

বর্তমানে ভবনগুলোর অবস্থা এতোটাই জরাজীর্ণ যে, যেকোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা আকাঙ্কা করছেন গণপূর্ত বিভাগ।

প্রধান শিক্ষকের দাবি, ভয়াবহ রানা প্লাজা ট্রাজেডির সময় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই পরিবারগুলোকে সরিয়ে দিলেও পরবর্তীতে লিখিতভাবে মৃত্যুর দায় মাথায় নিয়ে পুনরায় বসবাস শুরু করেন তারা।

এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ভবনগুলো নিয়ে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পরিবারগুলো বসবাস করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সচেতনমহল। তারা মনে করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবনগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ সাইনবোর্ড না লাগিয়ে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। যে কারণে অনেকেরই বিষয়টি অজানা রয়েছে। এখানে বসবাসরত সবাইকে অনত্রে সরিয়ে দ্রুত ভবনগুলো ভেঙে দিলে এই পরিবারগুলো বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাবে।

অন্যদিকে, আবাসিক ভবনগুলো শিক্ষকদের থাকার জন্য কোন সালে নির্মাণ হয়েছে এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর গাইবান্ধায় কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন সেখানকার উপ-সহকারী প্রকৌশলী স.ম আব্দুল লাহেল লাকী। তবে তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে গণপূর্ত বিভাগ ভবনগুলো বসবাসের জন্য অনুপযোগী হিসেবে ঘোষণা করে ভেঙে দেয়ার নির্দেশ দেয়।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাসকারী সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক নয়ন চন্দ্র বলেন, একটি ভবনে পরিবার নিয়ে থাকি। ভবনটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। কিন্তু আর্থিক দিক বিবেচনা করে আমাকে এখানে থাকতে হচ্ছে।

সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের অসিস সহায়ক মহাসিন আলী বলেন, জরাজীর্ণ এসব ভবনে বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে কোনও রকমে বসবাস করছি। তবে ঝড়-বৃষ্টির সময় ভবন ভেঙে পড়ার ভয়ে আতঙ্কে থাকি। কিন্তু কোনো উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই এখানে বসবাস করতে হচ্ছে।

সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী বাদল রায় বলেন, এসব বাসায় ভাড়া দিতে হয় না। তাই, ঝুঁকি নিয়ে থাকি আমরা। আমাদের বেতন দিয়ে সংসার চালানোই দায়, বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকব কি করে।

তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পরিবারগুলোর বসবাসের বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানা বানু বলেন, এই ভবনগুলোতে যারা আছে তাদের কাছে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন ভাড়া নেয় না এবং তারা সকলেই নিজে লিখিতভাবে মৃত্যুর দায় নিয়ে আছে। এর আগে একবার তারা চলে গেলেও পুনরায় ফিরে এসে এমন আবেদন দিয়ে বসবাস করছেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কোনো পরিবারকে থাকতে দেয়া দায়িত্বহীনতার পরিচয়। আমি বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।

(ঢাকাটাইমস/৩সেপ্টেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :