নিয়োগে জালিয়াতি, শিক্ষকসহ কারাগারে ১০

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২১:২৭

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত), আদালতের এপিপিসহ (সহকারী পাবলিক প্রসিউকিটর) ১০ জনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার বিকালে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাসিস্ট্রেট আদালতের (চৌকি) বিচারক পার্থ ভদ্র এ আদেশ দেন।

এর আগে দুপুরে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর বিকালে ১০ আসামি আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তা নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল উপজেলার ধরমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি। গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতের এপিপি মিজানুর রহমান তার স্ত্রী একই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগমসহ তাদের লোকজন বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর ও অফিসিয়াল সিল ব্যবহার করে জাল দলিল তৈরি করেন।

পরে নিজেরাই একই বছরের ৩০ এপ্রিল বিদ্যালয় নতুন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ ঘোষণা করে। এছাড়া এপিপি মিজানুর রহমান তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য এসব জালিয়াতির আশ্রয় নেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, ‘এই জাল দলিল তৈরিতে এপিপি মিজানুর ও তার লোকজন উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসার (প্রিজাইডিং অফিসার-নিয়োগ), উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজারসহ মোট পাঁচজনের স্বাক্ষর, স্ব স্ব কার্যালয়ের সিলসহ ভুয়া স্মারক নম্বর তৈরি করে অধিদফতরে পাঠায়, যা পরবর্তীতে বিষয়টি অধিদফতরের তদন্তে ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়।

এছাড়া একই বছরের ২৫ জুন আগের কমিটির সদস্য, মামলার বাদি খায়রুল বারি ও পরিসংখ্যান অফিসারসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে মনোয়ারা বেগম ও তার এপিপি স্বামী মিজানুর রহমান। একই দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আসামিরা পরিসংখ্যান অফিসারসহ কয়েকজনকে গুরুতর আহত করে। এছাড়া মামলায় তাদেরকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তোলা হয়।

এই ঘটনায় গত বছরের ৩০ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুল বারি পেনাল কোডে একটি জালিয়াতি ও হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। সেখানে এপিপি মিজানুর, তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমসহ আসামি করা হয় ১০ জনকে। পরবর্তীতে আদালত মামলাটির তদন্তভার দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের আইনজীবী এএসএম ফয়জুল আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের নিয়োগ নিয়ে স্পষ্ট প্রতিবেদন দিয়েছে পিবিআই। শুনানি শেষে বিচারক মামলার ১০ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, ‘নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তৎকালীন উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা পরিতোষ শর্মা ছিলেন নিয়োগ কমিটির প্রিজাইডিং অফিসার। এপিপি ও তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম এবং তাদের পক্ষের লোকজন জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সমাপ্ত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে সেটি অধিদফতরের নজরে এলে বাতিল করাসহ কমিটি ভেঙে দেয়া হয়।

তদন্তকালে ১০ আসামির বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট জালিয়াতির প্রমাণসহ অধিদফতর থেকেও জালিয়াতির বিষয়টি খোলাসা করা হয়েছে বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/৮সেপ্টেম্বর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :