অবণ্টিত লভ্যাংশ পুঁজিবাজার তহবিলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকারের: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:২২ | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:২৩

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সকল প্রতিষ্ঠানের অবণ্টিত বা অদাবিকৃত মুনাফা পুঁজিবাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর)  সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সাংবাদিকদের  এসব কথা বলেন তিনি। 

অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে বাজেটে বিস্তারিত বলা হয়েছে। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকেরও ভূমিকা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংক বসে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে।

জানা গেছে, অদাবিকৃত লভ্যাংশের অর্থ পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলে স্থানান্তরের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয় গত সোমবার আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রকদের সমন্বয় সভায়। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ব্যাংক কোম্পানি আইনানুসারে, ব্যাংক হিসাবে থাকা নগদ আমানতের অর্থ যদি ১০ বছর পর্যন্ত অদাবীকৃত থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে ব্যাংক কোম্পানি আইনানুসারে এ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠিয়ে দেবে ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকে এ অর্থ পাঠানোর পর দুই বছরের মধ্যে যদি কোনো দাবি উত্থাপিত না হয় তাহলে এ অর্থের ওপর কারো দাবি থাকবে না এবং সেটি সরকারের সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে। এ অর্থ তখন সরকারের কাছে ন্যস্ত করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আইনের এ বিধানের উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংক আরো জানায়, বিএসইসির গঠন করা পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অদাবিকৃত নগদ লভ্যাংশের অর্থ স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অদাবিকৃত এ নগদ লভ্যাংশের অর্থ ব্যাংক হিসাবে নগদ আমানত হিসেবে জমা থাকে। ফলে ব্যাংক কোম্পানি আইনানুসারে এ অর্থ সংশ্লিষ্ট হিসাবধারীর অনুমোদন ছাড়া অন্য কোথাও স্থানান্তরের সুযোগ নেই।

পুঁজিবাজারসংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে মতবিরোধ নতুন কিছু নয়। এর আগেও পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগসীমা, বিনিয়োগ গণনার ক্ষেত্রে বাজারমূল্যের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে হিসাবে নেয়া, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিষয়ে নজরদারির মতো বিষয়গুলোতে আর্থিক খাতের এ দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে মতপার্থক্য দেখা গেছে।

দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে মতপার্থক্যের বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, এ মতপার্থক্য যেটা দেখা যাচ্ছে এটি মৌলিক কোনো মতপার্থক্য নয়। তাই আমি এটিকে গুরুত্ব দিতে চাই না।

জানা গেছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানির অবণ্টিত ও অদাবিকৃত মুনাফার অর্থ জমা নিতে কমিউনিটি ব্যাংকের গুলশান শাখায় হিসাব খুলেছে এসইসি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সে টাকা পুঁজিবাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিলে জমা নিয়ে আপত্তি জানানোর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার প্রশ্ন করা হলে অর্থমন্ত্রী জানান, এটি সরকারের সিদ্ধান্ত।

(ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/আরএ/কেআর)