কেয়া কসমেটিকসের মালিক ও পরিবারের বিরুদ্ধে ৫ মামলা

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬:৩৮

অনলাইন ডেস্ক

প্রায় ১৮৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও প্রায় একশ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও মালিক আবদুল খালেক পাঠান, তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা১ এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. শফি উল্লাহ বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন বলে জানা যায়।

তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, কেয়া কসমেটিকসের লিমিটেড এর চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যরা ১৮৩ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ২৬৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৯৬ কোটি ২৯ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন।

দুদক অনুসন্ধানে তাদের সম্পদ বিবরণী চাওয়া হলে ২০১৯ সালে দাখিল করা কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড এর চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সম্পদ বিবরণী দুদক ৪৯ কোটি ৩৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৮৭ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনের প্রমাণ পায়। এছাড়া আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১৩৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯ হাজার ২৪৫ টাকার সম্পদের সন্ধান পায় যা অর্জনের বৈধ কোনো ভিত্তি খুঁজে পায়নি সংস্থাটি।

দুদকের অনুসন্ধানে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আসামি আবদুল খালেক পাঠান, তার স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ের নামে দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৪৪৬ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৩৭ টাকার সম্পদ দাখিল করেন। যা বৈধ। এছাড়া তিনি ৪৯ কোটি ৩৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৮৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন, যা তার আয়ের সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে দুদকের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।

দুদকে দেওয়া সম্পদ বিবরণী থেকে জানা যায়, ১৯৯৮-৯৯ করবর্ষে তিনি ৫২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার ১৯৬ টাকা মূল্যের সম্পদের রেকর্ডপত্র দাখিল করেন। যেখানে তার গ্রহণোগ্য আয় ৩৯৫ কোটি ২৬ লাখ ২৯ হাজার ৯৫১ টাকা। এাড়া  অতিরিক্ত ১৩৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯ হাজার ২৪৫ টাকার সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পায়নি দুদক।

একইভাবে আবদুল খালেক পাঠানের স্ত্রী ও কেয়া কসমেটিকসের পরিচালক মিসেস ফিরোজা বেগমের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি ৯৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৮৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে দুদকের অপর একটি  মামলায়। এছাড়া ২০১৯ সালের  দাখিল করা সম্পদ বিবরণী তার বিরুদ্ধে ১৭ কোটি ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনে অভিযোগ এনেছে সংস্থাটি। আব্দুল খালেকের ছেলে ও কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের পরিচালকমো. মাসুম পাঠানের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৭২ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি ৪৭ লাখ ৭৬ হাজার ১৮৫ টাকার সম্পদের অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে।

এছাড়াও আরও দুটি মামলা দায়ের করে দুদক। একটি আব্দুল খালেক পাঠানের মেয়ে ও কেয়া কসমেটিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসেস খালেদা পারভীনের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৩২ হাজার ৩৬১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করার অভিযোগ এবং অবৈধভাবে অর্জিত ২ কোটি ৩৫ লাখ ৫১ হাজার ১৮০ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে। অন্য আরেকটি মামলায় খালেকের মেয়ে ও কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের পরিচালক মিসেস তানসীন কেয়ার নামে। কেয়ার বিরুদ্ধে ১৬ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় যায়। এছাড়া তিনি দুদকের দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে ২৫ কোটি ৯ লাখ ৮৭ হাজার ১১৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন। আনা হয়েছে।

এর আগে ২০১৬ সালে অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে আব্দুল খালেক পাঠানকে  জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন দুদক। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১১১ কোটি ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আব্দুল খালেক পাঠান ও ছেলে-মেয়েসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক। ওই মামলায় কেয়া কসমেটিকসের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। পরে ওই মামলায় তিনি জামিনে মুক্ত হন।

ঢাকাটাইমস/১৫ সেপ্টেম্বর/এসআর/ইএস