পুলিশে নিয়োগ: ছয় দিনে এক লাখ ১০ হাজার আবেদন

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

কনস্টেবল পদে নতুন নিয়মে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। ইতিমধ্যে এই পদে চাকরির জন্য ছয় দিনে এক  লাখ ১০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে।

গত  ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের আবেদন শুরু হয়েছে। দেশের ৬৪ জেলায় তিন হাজার শূন্যপদের বিপরীতে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদন চলবে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত।

পুলিশ সদরদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে পাঁচ হাজার ৫০৪ জন, টাঙ্গাইল থেকে চার হাজার ৩০৮, ময়মনসিংহে চার হাজার ১৪২, সিরাজগঞ্জে তিন হাজার ৯২৯, ঢাকায় তিন হাজার ৭৭২, বরিশালে তিন হাজার ৭১৭, রংপুরে তিন হাজার ৫২৬, কুমিল্লায় তিন হাজার ২৯০, রাজশাহীতে তিন হাজার ২৭৫, পাবনায় তিন হাজার ৫৯ এবং নওগাঁয় দুই হাজার ৬৯৪টি আবেদন জমা পড়েছে।

পুলিশ সদরদপ্তর জানায়, এবার কনস্টেবল নিয়োগের আবেদন সম্পূর্ণ অনলাইনে করা হচ্ছে। কনস্টেবল পদে আবেদনের জন্য ন্যূনতম এসএসসি পাস হতে হজবে। ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী বাংলাদেশি যেকোনো নারী ও পুরুষ আবেদন করতে পারবেন। তবে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যারা বয়স শেষ হয়ে গেছে তারাও এবার আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য কোটা অনুসরণ করা হবে। এবার নতুন নিয়মে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

কী আছে নতুন নিয়মে?

নতুন নিয়মের পরীক্ষার ধাপগুলো হচ্ছে প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং, শারীরিক মাপ ও ফিজিক্যাল অ্যান্ড্যুরেন্স টেস্ট, লিখিত পরীক্ষা, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা, প্রাথমিক নির্বাচন, পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্তকরণ।

পুলিশ সদরদপ্তর জানায়, আবেদনকারীরা শুধু অনলাইনে পুলিশ সদরদপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দেবেন। ওয়েবসাইটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়েববেজড স্ক্যানিং করা হবে। আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে একটি এসএমএস করা হবে। এসএমএসে নিয়োগ সংক্রান্ত ওয়েব পোর্টালে লগইন করার জন্য ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। সেই পোর্টালে লগইন করে আবেদনকারীকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে হবে। প্রবেশপত্র প্রিন্ট করে দুই কপি করে নিয়োগ পরীক্ষার প্রতিটি ধাপে অংশগ্রহণ করতে হবে।

নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর দিন প্রার্থীদের পুলিশের নির্ধারিত স্কেলে বুকের মাপ ও ওজন-উচ্চতা নেওয়া হবে। এরপর প্রার্থীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করে তাকে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য ‘যোগ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে তার ফরমে একটি সিল দেওয়া হবে।

পরবর্তী ধাপে অনুষ্ঠিত হবে শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা। এই পরীক্ষার আগে প্রার্থীকে ‘ইনডেমনিটির ঘোষণাপত্র’ নামে একটি ফরম পূরণ করতে হবে। ফরমে ওই প্রার্থী ‘শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ’ আছে বলে ঘোষণা দিয়ে স্বাক্ষর করবেন।

শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য ধাপে ধাপে সাতটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। এগুলো হচ্ছে- দৌড়, পুশ আপ, লং জাম্প, হাই জাম্প, ড্র্যাগিং ও রোপ ক্লাইমিং। এসব ধাপের কোনো একটিতে অকৃতকার্য হলে পরবর্তী ধাপের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যাবে না এবং সেখানেই তার পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।

শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের ৬ষ্ঠ ধাপে রয়েছে ড্র্যাগিং পরীক্ষা। এই ধাপে পুরুষ প্রার্থীদের ১৫০ পাউন্ডের টায়ারকে টেনে ৩০ ফুট দূরত্ব এবং নারী প্রার্থীদের ১১০ পাউন্ড ওজনের টায়ার ২০ ফুট দূরত্বে আনতে হবে। এছাড়াও রোপ ক্লাইমিং পরীক্ষায় পুরুষদের ১২ ফিট ও নারীদের আট ফিট দড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে হবে।

শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সব ডকুমেন্ট নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে ৪৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ১৫ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এরপর লিখিত, মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষার পর উত্তীর্ণদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/এএ/জেবি)