২০ কোম্পানিকে ওটিসি থেকে এটিবিতে হস্তান্তরের খসড়া প্রস্তুত

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:২৫

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশের উভয় শেয়ারবাজারে ওভার দ্যা কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটের যেসব কোম্পানিতে পাবলিক শেয়ারহোল্ডিং বেশি রয়েছে সেগুলোর মধ্য থেকে ২০টি কোম্পানিকে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তরের জন্য খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। মূলত ওটিসির কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা ও সম্ভাবনা যাচাই করেই এটিবিতে স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

 

ওটিসি থেকে এটিবিতে স্থানান্তর হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা কোম্পানিগুলো হলো- বাংলা প্রসেস ইন্ডাস্ট্রিজ, ড্যান্ডি ডাইং, ডায়নামিক টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ, মেটালেক্স করপোরেশন, মিতা টেক্সটাইলস, মডার্ন সিমেন্ট, মডার্ন ইন্ডাস্ট্রিজ, মোনা ফুড প্রোডাক্টস, পারফিউমস কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রেট্রো সিনথেটিক্স প্রোডাক্টস, ফর্মাকো ইন্টারন্যাশনাল, কাশেম সিল্ক মিলস, কাশেম টেক্সটাইলস মিলস, রাসপিট ইনস বিডি, রোজ হ্যাভেন বলপেন, সালেহ কার্পেট মিলস, শেরপুর টেক্সটাইল মিলস, থেরাপিউটিক্স বাংলাদেশ, জাগো করপোরেশন ও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ওটিসি থেকে এসএমই প্ল্যাটফর্মে নেওয়ার পর অবশিষ্ট সম্ভাবনাময় কোম্পানিগুলোকে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে স্থানান্তরিত করা হবে। বিশেষ করে ওটিসির কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেসব কোম্পানির শেয়ার পাবলিক হোল্ডিং বেশি রয়েছে, সেগুলোকেই এটিবিতে রাখা হবে। কারণ পাবলিক হোল্ডিং শেয়ার কোম্পানিটির মালিকদের কেনার সক্ষমতা নেই। তাই কোম্পানিগুলোর পাবলিক শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষার্থে এক্সিট প্ল্যানে না রেখে এটিবির জন্য রাখা হবে।

অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে শেয়ার কেনাবেচার ক্ষেত্রে বিক্রেতা ও ক্রেতার উভয়ের আদেশ দেখা যাবে। ওটিসি মার্কেটে শুধু শেয়ার বিক্রেতার আদেশ দেখা যায়। সেখানে শেয়ার কেনার আদেশ থাকে না।

 

এছাড়া শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিগুলো এটিবিতে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ দেওয়া হবে। ওই কোম্পানিগুলো কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির মাধ্যমে এটিবিতে অন্তর্ভুক্ত হবে। এর ফলে কোম্পানিগুলোর ১০ টাকার শেয়ার হস্তান্তরে স্ট্যাম্প ডিউটি ট্যাক্স দিতে হবে মাত্র ১০ পয়সা। আর এটিবির বাইরে ১০ টাকার শেয়ার হস্তান্তরে স্ট্যাম্প ডিউটি ট্যাক্স দিতে হয় আড়াই টাকা। ফলে এটিবিতে অন্তর্ভুক্ত হলে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর স্ট্যাম্প ডিউটি ট্যাক্স কম দিতে হবে। এতে ওই কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজারের মূল মার্কেটে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি আরো সহজ হয়ে যাচ্ছে।

 

একইসঙ্গে ওপেন অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর ইউনিট বিক্রির জন্য এটিবিতে একটি প্ল্যাটফর্ম রাখা হবে। এটিবিতে ফান্ডগুলোর তাদের ইউনিট স্যারেন্ডার করে সেটেলমেন্ট করতে পারবে। ফলে ওপেন অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো ইউনিট বিক্রিতে সময়ক্ষেপণ কমবে। আর নন-লিস্টেট বন্ডও এটিবিতে লেনদেন করার সুযোগ থাকবে। এতে বন্ডগুলো কেনাবেচার ক্ষেত্র আরো প্রসারিত হবে।

 

২০০৯ সালের উভয় শেয়ারবাজারে ওটিসি মার্কেট চালু করা হয়। বিশেষ করে উৎপাদনে না থাকা, নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করা, কাগুজে শেয়ার ডিমেট না করা, নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেওয়া, লভ্যাংশ প্রদান না করা এবং সিকিউরিটিজ আইন যথাযথভাবে পরিপালন না করা কোম্পানিগুলোকে মূল মার্কেট থেকে ওটিসিতে শাস্তি স্বরূপ স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে কোম্পানিটি বা উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হলেও কার্যত শাস্তি পাচ্ছেন সেই কোম্পানির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

বর্তমানে ডিএসই’র ওটিসি মার্কেটে ৬১টি ও সিএসই’র ওটিসি মার্কেটে ৪৭টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। ওইসব কোম্পানির মধ্যে প্রাথমিক ভাবে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্মে ২১টি, অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে ২০টিকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এছাড়া এক্সিট প্ল্যান বা তালিকাচ্যুত আওতায় রয়েছে ২০টি কোম্পানি। এ বিষয়ে শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করবে বিএসইসি।

 

ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/আরএ