সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ৩০৩ ডিজিটাইজড সেবার উদ্বোধন

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:২২

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

মাইগভ র‌্যাপিড ডিজিটাইজেশন পদ্ধতিতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর,সংস্থার ৩০৩টি ডিজিটাইজড সেবা চালু হয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং এটুআই-এর কারিগরি সহযোগিতায় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বুধবার আয়োজিত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব ডিজিটাইজড সেবাসমূহের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যে অন্যতম একটি উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর তত্ত্বাবধানে বিগত ১২ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে করোনা মহামারির সময়ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও করোনাকালীন ১৯ মাসে দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রশাসনিক কার্যক্রম, বিচারক ব্যবস্থাসহ সবকিছু সচল ছিল। তিনি বলেন, ই-নথির মাধ্যমে গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে দেড় কোটিরও বেশি ফাইল ডিজিটাল ব্যবস্থায় সম্পাদন করা সম্ভব হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে ১১ হাজার অফিস ও লক্ষাধিক কর্মকর্তা এটুআই এর তৈরি ইলেক্ট্রনিক ফাইল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার (ই-নথি) ব্যবহার করেছে। এর ফলে শত শত কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। 

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন দেশের ৭৩টি লাইব্রেরি ৩০০ কোটির অধিক টাকা ব্যয়ে কেন্দ্রীয় আর্কাইভ ডিজিটাইজ এবং আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বাতিঘর বাংলা একাডেমিকে ডিজিটাইজ করার বিষয়ে আইসিটি বিভাগ প্রযুক্তিগত সহায়তাসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করে নাগরিক সেবাকে সুলভ করা, সহজ করা এবং স্বচ্ছতা ও দ্রততার সাথে সকল সেবাকে জনগণের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাইগভ র‌্যাপিড ডিজিটাইজেশন পদ্ধতির ৫টি মূলনীতি রয়েছে। যা হলো- পরিচয় দিবো একবার, সেবা নেবো বারবার; চাওয়ার আগেই সেবা প্রদান; আবেদন করবো: যেকোন সময়ে, যেকোন পদ্ধতিতে, যেকোন স্থান হতে; কম সময়, ব্যয় ও ভ্রমণে উন্নত সেবা প্রাপ্তি এবং গ্রাহক সন্তুষ্টির পরিমাপ।

তিনি জানান, দেড় বছরের মধ্যে ১৭টি মন্ত্রণালয়কে একত্রিত করে এক হাজারেরও বেশি সেবাকে ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে একটি সিঙ্গেল প্ল্যাটফর্ম মাইগভ এ নিয়ে আসা হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, মাইগভ র‌্যাপিড ডিজিটাইজেশন প্ল্যাটফর্মের আওতায় ইতোমধ্যে যে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগের ডিজিটাইজেশন সম্পন্ন হয়েছে, তার মধ্যে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ সংখ্যক সেবার (৩০৩টি) ডিজিটাইজেশন সম্পন্ন হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্র ও কর্মপরিধি কত ব্যাপক। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত ১৭টি দপ্তর-সংস্থার মধ্যে ১০টি দপ্তর-সংস্থার ডিজিটাইজেশন সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৭টি সংস্থার র্যাপিড ডিজিটাইজেশন সম্পন্ন হলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাইজেশনকৃত সেবার সংখ্যা আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে।

কে এম খালিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সুযোগ্য, বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ ও নির্দেশনায় প্রতিটি ঘরে ঘরে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পৌঁছে গেছে। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাতাস হতে ফ্রি অক্সিজেন গ্রহণের মূল্য আমরা যেমন বুঝি না, একইভাবে অনেকেই ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত ডিজিটাল বাংলাদেশের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনুধাবন করতে পারছেন না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন জরুরি সেবার হেল্পলাইন ৩৩৩ ও ৯৯৯ এর মাধ্যমে ডিজিটাল সেবা নিচ্ছি। অথচ দেশের তথ্য উপাত্ত পাচার হয়ে যাওয়া ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে এই ভয়ে ফ্রি ফাইবার অপটিক্যাল কানেকশন তখন নেয়নি বিএনপি। আর সে সংযোগ আমাদেরকে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করে নিতে হয়েছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মাইগভ র‌্যাপিড ডিজিটাইজেশন পদ্ধতিতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার ডিজিটাইজড হওয়া সেবা বিষয়ে উপস্থাপনা প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চিফ ইনোভেশন অফিসার (অতিরিক্ত সচিব) অসীম কুমার দে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এটুআই-এর নবনিযুক্ত প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থা প্রধান এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। 

(ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/এজেড)