প্রধান অতিথিসহ সাংবাদিকদের পাঁচ সংগঠনের প্রণোদনার অনুষ্ঠান বয়কট

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:৩২

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

গাইবান্ধায় সদ্য গঠিত ‘সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদ’ নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিকদের প্রণোদনার অনুষ্ঠান বয়কট ঘোষণা করেছেন প্রধান অতিথিসহ সাংবাদিকদের পাঁচটি সংগঠন।

বুধবার বিকালে জেলা পরিষদের হলরুমে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে প্রণোদনার টাকার উৎস ও বিভিন্ন সমন্বয়হীনতার কারণে জেলার তিনটি প্রেসক্লাব, রিপোটার্স ইউনিটির সাংবাদিকসহ ভিডিও জার্নালিস্টরা আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুষ্ঠানটি বর্জন করেন।

এরপর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও প্রধান নির্বাহী আব্দুর রউফ তালুকদার কল্যাণ পরিষদের অসৎ উদ্দেশ্যের বিষয়টি জানতে পেরে অনুষ্ঠানে না যাওয়ার ঘোষণা দেন। সেই সাথে জেলা পরিষদ কর্তৃক সাংবাদিকদের করোনাকালীন প্রণোদনার অর্থ সঠিকভাবে বণ্টন না করায় সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের কাছে টাকা ফেরত চেয়ে চিঠি দেওয়ার কথাও জানান।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসক্লাবকে প্রণোদনার টাকা ফেরত চেয়ে চিঠি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী আব্দুর রউফ তালুকদার।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিকদের জন্য জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদ নামে একটি সংগঠনকে কয়েক দফায় মোটা অঙ্কের টাকা প্রদান করে। সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদ জেলার মূল ধারার ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিক, তিনটি প্রেসক্লাব, ফটো অ্যান্ড ভিডিও জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং রিপোটার্স ইউনিটিকে বাদ দিয়ে নামমাত্র কিছু সাংবাদিক এবং তাদের মনোনীত দুটি সংগঠনকে সেই টাকা প্রদান করে। সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের এমন কর্মকাণ্ডকে ঘিরে জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। জেলার সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি জেলা পরিষদের বরাদ্দ অর্থ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। কি করে নতুন একটি সংগঠনকে জেলা পরিষদ এতগুলো টাকা বরাদ্দ দেয়?

জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রেজান্নবী রাজু জানান, কল্যাণ পরিষদ নামে একটি সংগঠনের কথা ক’দিন আগে শুনেছিলাম। কল্যাণ পরিষদের মাধ্যমে জেলা পরিষদের প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি শুনে আমি হতবাক হয়েছি! আমি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি হিসেবে এই সংগঠনের অনুষ্ঠান বর্জন করেছি এবং দাবি করছি এই সংগঠন অচিরেই বিলুপ্ত করার।

প্রেসক্লাব গাইবান্ধার (গোরস্থান মোড়) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাভেদ হোসেন জানান, ঐক্যের ডাক দিয়ে কিছুসংখ্যক নবীন এবং প্রবীণ নামমাত্র সাংবাদিক ‘কল্যাণ পরিষদ’ গঠন করে তাদের নিজেদের সংকীর্ণতা প্রকাশ করে যাচ্ছেন। জেলা পরিষদের তহবিল থেকে সাংবাদিকদের প্রণোদনা দেওয়ার কথা বলে যে পরিমাণ অর্থ তারা উত্তোলন করেছে তা লোক দেখানো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের মনোনীত ব্যক্তিকে অর্থ প্রদান করে জেলার সকল সাংবাদিক সংগঠন তথা সাংবাদিক সমাজকে বিতর্কিত করেছেন।

এ বিষয়ে প্রেসক্লাব গাইবান্ধা (কাচারি বাজার) ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রহমান স্বপন জানান, সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদ আমাদের চিঠি দিয়েছিল। তাৎক্ষণিকভাবে সভাপতি একটি মিটিং আহবান করে সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের প্রণোদনা না নেওয়ার ঘোষণা দেন।

সদ্য জন্ম নেয়া বিতর্কিত সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের মাধ্যমে সাংবাদিকদের প্রণোদনার টাকা দেয়ার কারণ জানতে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতাকে একাধিকবার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

(ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/এলএ)