যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-অস্ট্রেলিয়ার চুক্তি ‘সংকীর্ণ মানসিকতার’: চীন

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:১৭ | আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:৫৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ঐতিহাসিক নিরাপত্তা চুক্তির তীব্র সমালোচনা করে চীন এ চুক্তিকে ‘চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘সংকীর্ণ মানসিকতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। খবর বিবিসির

ওই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়াকে পরমাণু চালিত সাবমেরিন নির্মাণের প্রযুক্তি দিয়ে সহযোগিতা করবে। এটিকে বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে একটি উদ্যোগ বলেই মনে করা হচ্ছে। ওই অঞ্চলে বহু বছর ধরেই সংকট বিরাজ করছে এবং এর জের ধরে উত্তেজনাও রয়েছে তুঙ্গে।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাঁও লিজিয়ান বলেছেন, ওই (যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়ার) জোট আঞ্চলিক শান্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি তৈরি করেছে এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে জোরদার করছে।

তিনি দেশ তিনটির তীব্র সমালোচনা করে ‘স্নায়ু যুদ্ধ মানসিকতা’ আখ্যায়িত করেছেন এবং সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, দেশ তিনটি তাদের নিজেদের স্বার্থেরও ক্ষতি করছে।

চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোতেও একই মনোভাব ব্যক্ত করে তিন দেশের জোট বিরোধী সম্পাদকীয় প্রকাশ করা হয়েছে।

এর মধ্যে গ্লোবাল টাইমস পত্রিকা বলেছে, ‘অস্ট্রেলিয়া এখন চীনের একটি প্রতিপক্ষে পরিণত হয়েছে’। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র গত পঞ্চাশ বছরের মধ্যে এই প্রথম তার সাবমেরিন প্রযুক্তি অন্য কাউকে দিতে যাচ্ছে। এর আগে তারা এটি শুধু যুক্তরাজ্যকেই দিয়েছিল।

আর এ চুক্তির মানে হল অস্ট্রেলিয়া এখন পরমাণু চালিত সাবমেরিন তৈরি করতে পারবে, যা প্রচলিত সাবমেরিনের চেয়ে অনেক বেশি দ্রুতগতির এবং একে চিহ্নিত করা আরও কঠিন। এ ধরনের সাবমেরিন কয়েক মাস পানিতে ডুবে থাকতে পারে এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম।

যদিও অস্ট্রেলিয়া বলছে, সাবমেরিনে পরমাণু অস্ত্র বহনের কোন পরিকল্পনা দেশটির নেই। অকাস (Aukus) নামের নতুন চুক্তিটি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।

তারা যদিও চীনের নাম উচ্চারণ করেননি, তবে তিন নেতাই ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন- যা তাদের ভাষায় ক্রমাগত বাড়ছে।

চীন অস্ট্রেলিয়ার বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এবং অতীতেও দু’দেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দু'দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। বিশেষ করে চীনের উইঘুরদের বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান, টেলিকম কোম্পানি হুয়াওয়ের কিছু প্রযুক্তি নিষিদ্ধ করা এবং করোনাভাইরাস মহামারি তদন্তে সমর্থন দেয়া নিয়ে তাদের রাজনৈতিক সম্পর্কে ভাঙ্গন ধরেছে।

তাছাড়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাপক বাড়ানো নিয়েও পশ্চিমারা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিল। তারা চীনের কিছু ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নিয়েও ক্ষুব্ধ ছিল। যেমন গত বছরই চীন অস্ট্রেলিয়ার ওয়াইনের ওপর কর বাড়িয়েছিল দুশো ভাগ পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, চীনের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার নিজেকে সুরক্ষার পক্ষে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/একে