দক্ষিণ এশিয়ায় পরিচিতি পেতে কাজ করছিল ইভ্যালি

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:৫৪ | আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:১০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ইভ্যালির পরিকল্পনা ছিল মার্কেট ভ্যালু তৈরি করে দক্ষিণ এশিয়ায় পরিচিতি পাওয়া। গ্রাহকের টাকা ও লভ্যাংশের পুরোটাই এ কাজে ব্যবহার করা হয়।

শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন এলিট ফোর্স র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল কারা ইভ্যালিকে মদদ ও সহযোগিতা করেছে। এমন প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব কর্মকর্তা কমান্ডার মঈন বলেন, অফার দিয়ে ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করেছেন। অফারে তিনি সাধারণ বা বহুল প্রচলিত পণ্যকেই টার্গেট করেন। তিনি চেয়েছিলেন মার্কেট ভ্যালু তৈরি করে দক্ষিণ এশিয়ায় পরিচিতি পাওয়া। গ্রাহকের টাকা ও লভ্যাংশের পুরোটাই তিনি এ কাজে ব্যবহার করেছেন।

দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করতে চেয়েছিলেন কি না জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, একটি বিদেশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় অফারের আলোকে ইভ্যালির ব্যবসায়িক স্ট্র্যাটেজি তৈরি করেন রাসেল। প্রথমত একটি ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরির পরিকল্পনা করেন। পরে দায়সহ কোনো প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোম্পানির কাছে ইভ্যালিকে বিক্রি করে লভ্যাংশ তুলে নিতে চেয়েছিলেন। এ উদ্দেশে তারা বিভিন্ন দেশও ভ্রমণ করেন।

অন্যান্য পরিকল্পনার মধ্যে ছিল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির কাছে শেয়ারের অফার দিয়ে প্রলুব্ধ করে দায় চাপিয়ে দেওয়া। এছাড়া তিন বছর পূর্ণ হলে শেয়ার মার্কেটে অন্তর্ভুক্ত হয়ে দায় চাপানোর পরিকল্পনাও করেন। দায় মেটাতে বিভিন্ন অজুহাতে সময় বাড়ানোর আবেদন ছিল অপকৌশল মাত্র। সর্বশেষ তিনি দায় মেটাতে ব্যর্থ হলে ‘দেউলিয়া ঘোষণার’ পরিকল্পনা করেছিলেন।

ইভ্যালির সিইও দেশের বাইরে কোনো প্রতিষ্ঠান গড়েছেন বা অর্থপাচার করেছেন কিনা জানতে চাইলে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মঈন বলেন, দেশের বাইরে তিনি প্রচারণা চালিয়েছেন অর্থলগ্নির জন্য। তবে এখনও তিনি কোনো প্রতিষ্ঠান গড়েছেন বলে তথ্য দেননি। অর্থপাচার করেছেন কিনা তা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও তদন্ত করছে। তিনি অর্থপাচার করেছেন এমন তথ্যও তিনি র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানাননি।

এর আগে এলিট ফোর্সটির মুখপাত্র জানান, অনলাইনে পণ্য সরবরাহকারী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং তার স্বামী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল পদাধিকার বলে নিজেরা মাসিক ৫ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা বেতন নিতেন। তারা কোম্পানির টাকায় ব্যক্তিগত দুটি দামি গাড়ি ব্যবহার করতেন।

বৃহস্পতিবার ভোরে গুলশান থানায় আরিফ বাকের নামে একজন ভুক্তভোগী মামলা করেন। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ইভ্যালির অনলাইন প্লাটফর্মে ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকার পণ্য অর্ডার করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা পাননি তিনি। নিরুপায় হয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেন তিনি। সেই মামলায় এদিন বিকালে রাসেল দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে শুক্রবার তাদেরকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ এরই মধ্যে তাদেরকে আদালতে নিয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/এসএস/কেআর)