চিরিরবন্দরে সমতল ভূমিতে মাল্টা চাষ

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:৫৪

মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর)

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাল্টা চাষ। এখনাকার মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাল্টার আবাদ ভালো হচ্ছে। তবে ভালো দাম পাওয়ায় সমতল ভূমিতে দিনদিন মাল্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মাল্টা বারী-১ জাতের প্রদর্শনী জাতের বাগানগুলো করা হয়েছে চিরিরবন্দরে। মাল্টা চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।

উপজেলার উত্তর নশরতপুর গ্রামের কৃষক আহসান হাবিব রাসেল বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। তার প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে গাছে গাছে এখন ঝুলছে হাজার হাজার মাল্টা।

তার সাফল্য দেখে এলাকার অনেকেই মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। নশরতপুর গ্রামেই তার দেখে আরো ১০ জন কৃষক মাল্টা চাষ শুরু করেছেন। আর চিরিরবন্দরে মাল্টা চাষে নেমেছেন কমপক্ষে শতাধিক কৃষক।

কৃষি অফিস বলছে, ২০১৭ সাল থেকে চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা মাল্টা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার কার্যক্রম শুরু করেন। দ্বিতীয় শস্য বহুমুখী প্রকল্পের আওতায় কৃষি কার্যালয় থেকে বিনা মূল্যে বারি জাত-১ এর মাল্টা গাছের চারা সরবরাহ করা হয়। রাসেল প্রথমে ২৫ শতাংশ জমিতে ৫৬টি মাল্টার চারা রোপণ করেন। প্রায় দেড় বছর পরিচর্যার পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। প্রতিটি গাছে বর্তমানে ৫০-১০০টি ফল ধরেছে।

এদিকে মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা প্রতি কেজি দরে। এ বছরে সব বাগানেই বিপুল পরিমাণ মাল্টা ধরেছে। এদিকে বেকার যুবকেরা মাল্টা চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছে। কৃষকরা বলছেন, সরকারিভাবে ঋণ সুবিধাসহ সার্বিক সহযোগিতা পেলে উৎপাদিত মাল্টা চাষ প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবে উপজেলার কৃষকরা।

একইভাবে মাল্টা চাষ করছেন পাশের দক্ষিণ নশরতপুর গ্রামের কাজল রহমান ও ফিরোজ আহমেদ। তারা জানান, রাসেল ভাইয়ের মাল্টার বাগান দেখে আমরা এই বছর মাল্টার বানিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেছি । মাল্টার বাগানে তেমন বেশি রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না। মাল্টার ফুল আসার আগে জৈব সারের সঙ্গে স্বল্প পরিমাণে রাসায়নিক সার দিতে হয় । মাল্টার বাগানে পরিচর্চা করেই ভাল মানের ফল পাওয়া যায়।

কৃষক আহসান হাবিব রাসেল বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় উপজেলায় আমিই প্রথম মাল্টা চাষ শুরু করি। তিনি আরোও এখন আমি ৩ একর জমি মাল্টা চাষ করছি।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা বলেন, মাল্টা একটি অর্থকরী ফসল। এটি ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল। মাল্টাতে রয়েছে ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং চর্বিযুক্ত ক্যালরিসহ বিভিন্ন ওষুধিগুণ। এটি চাষে এলাকার পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হবেন কৃষক।

(ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/এলএ)