দেশি মাছের বংশ ধ্বংস করছে ‘চায়না দুয়ারি’

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:২১ | প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:২০

গত কয়েক বছর ধরে ফরিদপুরের বিভিন্ন বাজারের অবাধে বিক্রি হচ্ছে ‘চায়না দুয়ারি’। আর এর ফাঁদে পড়ে দিন দিন দেশি মাছের বংশ ধ্বংস হচ্ছে।

লোহার রডের তৈরি ছোট গোলাকার চতুর্ভুজ কাঠোমো আকৃতির, চার পাশে চায়না জাল দিয়ে ফাঁদ তৈরি করা। এই মাছ শিকারের যন্ত্রের নাম ‘চায়না দুয়ারি’। ক্ষেত্র ভেদে কোথাও ৫২ হাত আবার ৭০ হাত পর্যন্ত লম্বা হয়।

এই মাছ শিকারের ফাঁদ দিয়ে ফরিদপুরের পদ্মা, মধুমতি, আড়িয়ালখা, ভূবেন্বশ্বর, কুমারসহ বিভিন্ন বিল বাওরে কিছু মাছ শিকারি নির্বিঘ্নে দেশীয় প্রজাতির ছোট-বড় সব ধরনের মাছ ধরছেন।

সরেজমিনে ফরিদপুরের সদর উপজেলার ডিক্রীরচর, নর্থচ্যানেল, চরমাধবদিয়া গিয়ে দেখা যায়, চায়না দুয়ারি ফাঁদ দিয়ে ধরা দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছের পোনা বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

এই দুয়ারি নদীর পানিপ্রবাহে বাধা দেয়, এর জালের ছিদ্র ছোট হওয়ায় ছোট বড় কোনো মাছ বের হওয়ার সুযোগ পায় না। ফলে মাছের বংশবিস্তারে বিঘ্ন ঘটায়।

ডিক্রীরচর ইউনিয়নের নমোডাঙ্গী এলাকার মোজাফর নামের এক মাছ শিকারি জানান, চায়না দুয়ারি বসানো হয় নদীর তলদেশে। উভয় দিক থেকে ছুটে চলা যেকোনো মাছ সহজেই এতে আটকা পড়ে। একবার মাছ ঢুকে পড়লে বের হওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না।

সদরপুরের চন্দ্রপাড়া এলাকার ভুবেন্বশ্বর নদের মাছ শিকারি হাবিব মোল্লা জানান, নদীতে যে জায়গায় এই ফাঁদ পাতা হয় তার ওপর থেকে চিহ্ন রাখতে বাঁশের খুঁটি গাড়া (বসানো) হয়, যা দেখে সহজে বোঝা যায়, সেখানে চায়না দুয়ারি পাতা হয়েছে। দিনে দুই বার সকাল ও বিকালে ফাঁদগুলো তোলা হয়।

জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার পদ্মা নদীতে মাছ ধরে এমন কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রকারভেদে চায়না দুয়ারির দাম পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। তবে আগে একটু কম ছিল। প্রশাসনের তৎপরতার কারণে এখন একটু বেশি দামে কিনতে হয়।

চরভদ্রাসন উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান মোতালেব মোল্লা জানান, বাজারের দেশীয় মাছের পোনা দেখে মনটা খারাপ হয়। আমরা স্থানীয় প্রশাসন দিয়ে মাঝে মধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি। তবুও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গোপনে ওই মাছের বংশ ধ্বংসের ফাঁদ বেশি দামে বিক্রি করে।

ফরিদপুর শহরের ব্যবসায়ী ও সংবাদকর্মী সনজীব দাস জানান, এই বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীর পাড়ে সকালে মাছ কিনতে গেলে দেখা যায়, দেশীয় সুস্বাধু লিটা মাছের বাচ্ছা বিক্রি করছে। অথচ মাছগুলো এক দেড় মাস পানিতে থাকতে পারলে বেশ বড় হতো।

সনজীব দাস বলেন, এই চায়না দুয়ারি এসে আমাদের দেশীয় মাছের বংশ শেষ করে দিচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো একদিন দেশীয় মাছ আমরা সহজে পাবো না।

এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দেশীয় জাতের মাছ ধ্বংস করছে চায়না দুয়ারি, এটা সত্য। আমরা এ বিষয়ে জেলার সব উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি এই ফাঁদ প্রতিরোধ করতে এবং জেলেদের নিরুৎসাহিত করতে।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘ইতিমধ্যে জেলায় বেশ কয়েকটি বাজারের ‘চায়না দুয়ারি’ জব্দ করতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং এটা অব্যাহত থাকবে।

(ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

কেজি দরে অপরিপক্ক তরমুজ, পিস চাইলে দাম আকাশ ছোঁয়া

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতার চোখ উপড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

ফেনী সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের গণইফতারে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১০

মধ্যরাতে ফের মিয়ানমারের গুলির শব্দে কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত

উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক, দুর্ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি

বরগুনা প্রেসক্লাবের নামে ভুয়া কমিটি গঠনের অভিযোগ 

ঝিনাইদহে বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকারের অভিযান, ৩ প্রতিষ্ঠানে জরিমানা

যারা ট্রেনে আগুন দেয় তারাই ভাড়া বৃদ্ধির গুজব ছড়ায়: রেলমন্ত্রী

আলফাডাঙ্গায় দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

মানিকগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :