ঐতিহ্যবাহী কাশিমপুর রাজবাড়ির শেষ স্মৃতিটুকুও ধ্বংসের পথে

সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর (নওগাঁ)
| আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:২৪ | প্রকাশিত : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:২২

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর পাশে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী কাশিমপুর রাজবাড়ি। উপজেলার একমাত্র ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে পরিচিত এই রাজবাড়ি। কিন্তু অবহেলায় রাজবাড়ির শেষ স্মৃতিটুকুও ধ্বংসের পথে।

সচেতন মহল মনে করছেন, ঐতিহ্যবাহী এই স্থাপণাটির সংস্কার করা হলে রাজবাড়িটি ঘিরে গড়ে উঠতে পারে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য দর্শনীয় স্থান।

কাশিমপুর রাজবাড়ির পাগলা রাজা ছিলেন নাটোরের রাজার বংশধর। অন্নদা প্রসন্ন লাহিড়ী বাহাদুর ছিলেন এই রাজত্বের শেষ রাজা। তার চার ছেলে ও এক মেয়ে ছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর রাজবংশের সবাই এই রাজত্ব ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চলে যান। শুধু ছোট রাজা শক্তি প্রসন্ন লাহিড়ী বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত এই কাশিমপুর রাজবাড়িতে থাকতেন। সময়ের বিবর্তনে সেও এক সময় রাজবাড়ির স্টেটের অঢেল সম্পদ রেখে ভারতে চলে যান।

২ একর ১৯ শতক জমির উপর অবস্থিত কাশিমপুর রাজবাড়িটির নিদর্শনসমূহ রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার করা হয় না দীর্ঘদিন ধরে। ফলে এর সকল কারুকার্য ধ্বংস প্রায়। বর্তমানে রাজার জায়গার কিছু অংশ এখন কাশিমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

এদিকে, কশিমপুর রাজার শত শত বিঘা জমি ও পুকুর স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিভিন্ন কায়দায় দখলে রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজার সম্পত্তিগুলো স্থানীয় মানুষদের অত্যাচারে সবই এখন প্রায় বেদখল। রাজবাড়ির বেশির ভাগ জায়গা স্থানীয়রা অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বিভিন্ন পন্থায় উপজেলা ভূমি অফিস ও জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে লিজ নিয়ে চাতাল তৈরি করে ব্যবসা করছে। আর দ্বায়িত্বশীল মহল নজরে না নেওয়ায় কাশিমপুর রাজবাড়িটি দিনদিন স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে চাতাল, মিল, কলকারখানা, বসতবাড়ি। এছাড়া উঁচু জমি কেটে সমতল করে ধান চাষ করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, দ্বায়িত্বশীল মহল রাজবাড়ি ও রাজার সম্পদগুলোর উপর নজর না দেয়ার কারণে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মখলেছুর রহমান বাবু বলেন, স্বাধীনতার পর ও আগে কাশিমপুর রাজার বংশধররা কয়েক দফায় সবাই এই রাজত্ব ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চলে যান। তারা চলে যাওয়ায় স্থানীয় কিছু ব্যক্তি ইচ্ছে মত রাজার এই বিশাল সম্পত্তি দখলে নেয়। এমনকি বড় বড় দালানকোটা ঘেড়া প্রাচীর ও রাজার প্রাসাদের ইট খুলে প্রকাশ্যে দিবালোকে তা লুট করে বিক্রি করছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, ঐতিহাসিক নিদর্শন রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দিলে রাজবাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার করা হবে। আর সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জায়গা লিজ দেওয়া আছে বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২০সেপ্টেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :