হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ভোলার ইউনাইটেড মাল্টিপারপাস

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:২১

ভোলা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

প্রায় আড়াই হাজার গ্রাহকের আমানতের প্রায় হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করে গা ঢাকা দিয়েছেন ভোলার অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যাম মঞ্জুর আলম ও তার স্ত্রী রোজিনা আক্তার।

এদিকে নিজেদের গচ্ছিত টাকা ফেরত পেতে গত কয়েকদিন ধরে মানববন্ধন, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। একই সাথে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম ও তার স্ত্রী রোজিনা আক্তারকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম ও তার স্ত্রী পলাতক থাকলেও তার মালিকানাধীন তাসনিম এগ্রো লিমেটেড (অটোরাইস মিল)সহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, মঞ্জুর আলম ইউনাইটেড মাল্টিপারপাস নামে প্রতিষ্ঠান খুলে গ্রাহকদের বেশি টাকার লোভ দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে অর্থলগ্নি করে অনেকে এখন নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে।
ইতোমধ্যে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মঞ্জুর আলম, তার স্ত্রী ও স্বজনদের বিরুদ্ধে গ্রাহকরা আদালতে ১৬টি মামলা করেন।

পুলিশ মঞ্জুর আলমের শ্বশুর আব্দুল খালেক ও তার দুই ভাইসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করলেও কিন্তু মূল হোতা মনঞ্জুর আলম ও তার স্ত্রী পলাতক রয়েছে।

গ্রাহক বাবুল, হেলাল উদ্দিন, আব্দুল মোতালেব, আবুল কাশেম, সালমা বেগম, রুমা বেগম, শাহনাজ বেগম,  সফিমিয়া, ইয়াছিন   জানান, ২০০৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৪ বছরে ২ হাজার ৫০০ গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত হিসেবে ১ হাজার কোটি টাকা নেয় ভোলা জিয়া সুপার মার্কেটে অবস্থিত ইউনাইটেড কো-অপারেটিভ মাল্টিপারপাস লিমিটেড নামে অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান। ওই টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানে চেয়ারম্যান মনঞ্জুর আলম তার শ্বশুর আব্দুল খালেক, স্ত্রী রোজিনা, ভাই ইউছুফসহ কয়েক আত্মীয়ের নামে-বেনামে ঢাকাসহ বিভিন্ন প্রান্তে অটোরাইস মিল, ইটভাটা বহুতল ভবন, ভোলা শান্তির হাটে জুট মিলের নামে জমি ক্রয়, এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার প্রসেসিং, দুবাইতে গার্মেন্ট ব্যবসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। কিছুদিন গ্রাহকদের লভ্যাংশ দিলেও এক পর্যায়ে তা দেয়া বন্ধ করে দিলে গ্রাহকরা তাদের আমানতের টাকা ফেরত চান। এতে করে স্ত্রীসহ পালিয়ে যান প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম। টাকা ফেরত চাইলে উল্টো গ্রাহকদের হুমকি-ধামকি প্রদান করেন। 

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন বলেন, ইউনাইটেড মাল্টিপারপাসের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে মানুষের টাকা আত্মসাতের ৮-১০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলা পিবিআই ও সিআইডি তদন্ত করছে। ৪-৫টি মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট রয়েছে। তবে মঞ্জুর আলম ও তার স্ত্রী পলাতক থাকায় তাদের আটক করা যাচ্ছে না।

(ঢাকাটাইমস/২০সেপ্টেম্বর/এলএ)