মোবাইলে লুডু খেলার সময় বকা দেওয়ায় শিশুকে খুন

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:৫১

মোবাইলে লুডু খেলা নিয়ে বকা দেয়ায় রতন মোল্লা নামে আট বছর বয়সী এক শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে সোহান নামে আরও এক শিশুকে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বুধবার ভোরে মাদারীপুরের শিবচর থানা পুলিশ মেহেদী নামে একজনকে আটক করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তি হত্যার দায় স্বীকার করেছে।

পুলিশ ও নিহত শিশুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, শিবচর উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের চরকান্দি এলাকার নানা আনসু বেপারির বাড়িতে কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসে নাতি মেহেদী হাসান। এরপর মেহেদী পার্শ্ববর্তী জসিম মোল্লার ছেলে রতন মোল্লা (৮) ও নাসির সিকদারের ছেলে সোহানের (৯) সিঙ্গে মোবাইলে গেম খেলতো। মঙ্গলবার সকালে সোহানের মায়ের মোবাইলে আবারও এই তিনজন লুডু খেলে। খেলার সময় রতন ও সোহান মেহেদীকে বকা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মেহেদী শিশু দুটিকে হত্যার ছক কষে।

শিবচর থানা পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার বিকালে ঘুরে বেড়ানো ও নতুন রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর কথা বলে পদ্মা সেতুর এপ্রোচ সড়ক সংলগ্ন নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে সোহানকে পানি আর চানাচুর আনার জন্য ১০০ টাকা দিয়ে দোকানে যেতে বলে। সোহান খাবার আনতে চলে যায়। এরপর মেহেদী রতনকে নির্জন স্থানে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে সোহান এসে রতন সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বাড়ি চলে গেছে জানায় মেহেদি। এ কথা বলে মেহেদী সোহানকে নিয়ে বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় যায়। সেখানে নিয়ে সোহানকেও শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টা করে। সোহানের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে মেহেদী নানা বাড়ি পালিয়ে যায়। নানাবাড়ির লোকজন মেহেদীর শরীরে কাদামাখা দেখে রতন ও সোহানের খোঁজ চায়। কৌশলে মেহেদী বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে স্বজনরা শিবচর থানায় খবর দেয়।

পরে সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান, শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) আমির সেরনিয়াবাতসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মেহেদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে এবং হত্যাকাণ্ডের স্থানে রতনের লাশ দেখিয়ে দেয় মেহেদী। বের হয় হত্যার পৈশাচিকতা। উদ্ধার করা হয় মোবাইল ফোনটিও। বুধবার মধ্যরাতে লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে।

মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মোবাইলে লুডু খেলার সময় ওরা আমার বাবা-মাকে বকা দেয়। তাই ওদের আমি হত্যা করি।’

শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোবাইলে লুডু খেলার সময় বকা দেয়া নিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। আরও তদন্ত করলে বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।

সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান জানান, ‘রাগ আর ক্ষোভ থেকে মেহেদী হাসান দুই শিশুকে হত্যার চেষ্টা করে। এতে এক শিশু মারা যায়, অপরজন গুরুতর আহত হয়েছে। আমরা মেহেদীর কথা অনুযায়ী এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। সেই সঙ্গে পরিবার থেকে হত্যা মামলা করলে মেহেদীকে আদালতে পাঠানো হবে।’

ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :