ইভ্যালির সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ এম মাসুম ও সৈয়দ মাহসিব হোসেন।
পরে আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আবেদনকারী ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে গত মে মাসে একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের অর্ডার করেন।
ইভ্যালির একজন গ্রাহক অর্ডারের সময় তিনি মোবাইল ফোন ভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন। এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনার রশিদও দিয়েছেন।
কিন্তু এতদিনেও তারা পণ্যটি বুঝিয়ে দেয়নি। আবেদনকারী যোগাযোগ করার পর তাকে আশ্বাস দেওয়া হয়।
কিন্তু পণ্যটি দেয়নি কিংবা টাকাও ফেরত দেয়নি ইভ্যালি। যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি আবেদনকারী। তাই তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদনে কোম্পানিটির অবসায়ন চাওয়া হয়েছে।
তার আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত আবেদনটি অ্যাডমিট করেন। এছাড়া আদেশে ইভ্যালির যত সম্পদ আছে, সেটা যেন বিক্রি অথবা হস্তান্তর না করা যায়। আদালত একটি নোটিশ ইস্যু করেন, কেন ইভ্যালিকে অবসায়ন করা হবে না।
আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট, কনজুমার রাইটস প্রটেকশন ব্যুরো, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে।
এদিকে বুধবার সকালে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থপাচার বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে আজ হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং মোহাম্মদ কাওছার। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যংকের গর্ভনর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে অনলাইনভিত্তিক আর্থিক লেনদেন তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, ব্যাংকিং খাতে অনলাইন পেমেন্টের সুবিধা, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধির সুযোগে ইভ্যালি, ধামাকা, আলেশা মার্টসহ ই-কমার্স ভিত্তিক অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। গত কয়েক বছরে এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কার্যকর নজরদারির অভাবের সুযোগে গ্রাহক আকর্ষণে বিভিন্ন অনৈতিক অফার, ছাড়ের নামে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে।
ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/এআইএম/এমআর