অকাস চুক্তি: বাইডেন-ম্যাকরোঁ ফোনালাপ

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:০৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে হওয়া অকাস চুক্তি নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরোঁ। উত্তেজনা কমাতে এই আলোচনা কাজে দেবে বলে মরে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বুধবার ম্যাকরোঁর সঙ্গে আধা ঘণ্টার বেশি ফোনালাপ করেন বাইডেন। অক্টোবর মাসের শেষে ইউরোপে বৈঠক করবেন দুই নেতা।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অকাস সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির কারণে ফ্রান্সের সাথে করা অস্ট্রেলিয়ার চার হাজার কোটি ডলারের ১২টি সাবমেরিন নির্মাণের চুক্তিটি বাতিল করা হয়।

টেলিফোনে কথা বলার পর ইস্যু করা এক যৌথ বিবৃতিতে দুই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, মিত্র দেশগুলোর মধ্যে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমেই পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটবে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ফ্রান্স ও ইউরোপের সংযুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যৌথ বিবৃতিতে আরো বলা হয়, নেটোকে শক্তিশালী করার জন্য শক্তিশালী ইউরোপের প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে অকাস চুক্তির কারণে ফরাসী প্রেসিডেন্ট মি. ম্যাক্রঁ ক্ষিপ্ত হয়ে ওয়াশিংটন এবং ক্যানবেরা থেকে ফরাসী রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফিরিয়ে আনেন।

এখন ওয়াশিংটনে ফরাসী রাষ্ট্রদূতকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ক্যানবেরার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে কিনা তা বলা হয়নি।

বিবিসির ওয়াশিংটন সংবাদদাতা নোমিয়া ইকবাল বলছেন, এটি আমেরিকানদের 'ক্ষমা ভিক্ষা না করে ক্ষমা চাওয়া'র একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মানে হচ্ছে যে প্রক্রিয়ায় চুক্তি হয়েছে অর্থাৎ তেমন আলাপ-আলোচনা ছাড়া, সেজন্য ক্ষমা চাওয়া, কিন্তু যে চুক্তি করা হয়েছে তার জন্য নয়।

বিবিসি এমন একটি ছবি পেয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট ম্যাকরোঁর সাথে বলা সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেন হাসছেন, যাতে সব কিছু ঠিকঠাক আছে এমন একটি বার্তা বোঝানো হচ্ছে।

যৌথ বিবৃতির বক্তব্য খুব সাদামাটা হলেও একে অর্থপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। সাধারণ এ ধরনের টেলিফোন আলাপের পর প্রত্যেক দেশ পৃথক বিবৃতি ইস্যু করে। কিন্তু এই যৌথ বিবৃতি প্রকাশের মাধ্যমে দুই দেশের প্রেসিডেন্ট তিক্ততা ভুলে ঐক্যবদ্ধ হবার বার্তা দিতে চেয়েছেন।

গত সপ্তাহে স্বাক্ষরিত অকাস সামরিক চুক্তিকে মূলত দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের প্রভাব মোকাবেলার সবচাইতে তাৎপর্যপূর্ণ চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত গুরুত্বপূর্ণ আর কোন নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং অস্ট্রেলিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় একটি বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। অকাস চুক্তি স্বাক্ষরের পর ইইউ-অস্ট্রেলিয়া, এবং ইইউ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এটি তৃতীয় আনুষ্ঠানিক বৈঠক যা স্থগিত করা হলো।

ঢাকাটাইমস/২৩সেপ্টেম্বর/একে