তিন লাখ মানুষের ভাগ্য পাল্টে যাবে চার কিলোমিটার রাস্তায়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬:৪৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা। ২১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এখানে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এই উপজেলায় যোগাযোগের তেমন পরির্বতন হয়নি। বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে বলে প্রচার করা হলেও নবীনগর উপজেলার উরখুলিয়া গ্রামটি হাওরবেস্টিত এলাকা হওয়াই এখনো উন্নয়নবঞ্চিত রয়ে গেছে। আর এই গ্রামটির উন্নয়নে বদলে যেতে পারে অবহেলিত পূর্বাঞ্চলের ৬ ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের ভাগ্য।

তবে ইতোমধ্যে স্থানীয় সাংসদ এবাদুল করিম বুলবুলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে এশিয়ান হাইওয়ে নবীনগর-শিবপুর-রাধিকা সড়কের কাজ। চলমান রয়েছে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নবীনগর টু আশুগঞ্জ রাস্তার কাজ। রাস্তা দুটির নির্মাণ সম্পন্ন হলে নবীনগরে যোগাযোগ ক্ষেত্রে বিল্পব ঘটবে।

এদিকে মাত্র ৪ কিলোমিটার রাস্তা আর ১৫০ মিটার করে দুটি ব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে নবীনগর-আশুগঞ্জ রাস্তার সঙ্গে যুক্ত হলে অবহেলিত পূর্বাঞ্চলের ছয়টি ইউয়নিয়নের তিন লাখ মানুষের জীবনমান পাল্টে যাবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর অর্থায়নে টিআর-কাবিটার প্রকল্পের মাধ্যমে নতুনভাবে হাওরের মাঝখান দিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা বিদ্যাকুট থেকে উরখুলিয়া পর্যন্ত নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও উরখুলিয়া গ্রামের দুপাশে একই অর্থায়নে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হয়ে়ছে।

এলাকাবাসীর দাবি বিদ্যাকুট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উড়খুলিয়া লঞ্চঘাট পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তাকার্পেটিং একটি ১৫০ মিটার ব্রিজ এবং উড়খুলিয়ার পশ্চিমে ঈদগাহের কাছে দ্বিতীয় আরেকটি ১৫০ মিটার ব্রিজ নির্মাণ করে মাত্র দুই কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণ হলে বদলে যাবে এই এলাকার দৃশ্যপট।

এছাড়া উড়খুলিয়া চান্দের চর থেকে ১৫০ মিটার সেতু থেকে উত্তর-দক্ষিণে মাত্র ৫০০ মিটার রাস্তা সংযোগ করে দিলে বিকল্প রাস্তা হিসেবে মেরকুটা টু বগডহড়ের জিসি সড়ক নির্মাণের ফলে যোগাযোগের এক নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

উরখুলিয়া গ্রামের সমাজসেবক এমএ আউয়াল জানান, পানিবেস্টিত হাওর অঞ্চল বিদ্যাকুট ইউনিয়নের উরখুলিয়া গ্রামটিতে মাত্র চার কিলোমিটার রাস্তা ও কয়েকটি কালভার্ট, দুটি ব্রিজ নির্মাণ হলে শুধু যোগাযোগই নয় বদলে যাবে এলাকার অর্থনীতির চিত্র। দুপাশের হাওরের বুক চিরে রাস্তা হলে এলাকাটি রূপ নেবে পর্যটনকেন্দ্রে। রাস্তার দুপাশে গড়ে তোলা সম্ভব স্কুল, কলেজ, শপিং মল, শিশু পার্ক ও খেলার মাঠ।

এমএ আউয়াল বলেন, রাস্তাটি বাস্তবায়ন করা গেলে পূর্বাঞ্চলের অবহেলিত ছয়টি ইউনিয়নের লোকজন রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগে রাস্তা কমবে এবং সময় বাচঁবে প্রায় দুই ঘণ্টা।

এদিকে নবীনগরের স্থানীয় সাংসদ মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল বলেন, এই এলাকাটি ছিল দাঙ্গা-হাঙ্গামা আর সংঘর্ষের একটি গ্রাম। এ কারণে স্বাধীনতার পর এ গ্রামটিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দাঙ্গা-হাঙ্গামা থেকে ফিরিয়ে় এনেছি। তাদেরকে আমি কথা দিয়েছিলাম আপনারা দাঙ্গা-হাঙ্গামা থেকে ফিরে আসুন, আপনার এলাকার উন্নয়নের দায়িত্ব আমি নেব। তারই ধারাবাহিকতায় এই অবহেলিত গ্রামের যোগাযোগ ও শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। আমি অবহেলিত ছয় ইউনিয়নের প্রাণের দাবি এই চার কিলোমিটার রাস্তা করার জন্য চেষ্টা করব।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্তী ডা. এনামুর রহমান গত বুধবার নবীনগর উপজেলার উড়খুলিয়া গ্রামে আসেন এবং হাওরবেস্টিত এলাকা পরিদর্শন করে চার কিলোমিটার সড়ক নির্মাণসহ এলাকার উন্নয়নের আশ্বাস দেন। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল, উপজেলা কর্মকর্তা একরামুল সিদ্দিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হালিমসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২৩সেপ্টেম্বর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :