আদালতের আদেশে শিশুকে উদ্ধার করল পিবিআই

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:০৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আদালতের আদেশের সাত দিনের মধ্যে সাত মাসের শিশু ফারিয়া জান্নাতকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ইনভেটিগেশন ব্যুরো (পিবিআই)।

রবিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানার কাঠগোলা এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

সন্ধ্যায় পিবিআইয়ের সদরদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিশু ফারিয়া জান্নাত চলতি বছরে ১ মার্চ ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানার বীর আহম্মদপুর গ্রামে তার নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করে। তার বাবা আব্দুল আলী গত ১ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে তার মেয়ে ফারিয়া জান্নাত ও স্ত্রী কুলসুমাকে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে আনার জন্য যান। সেখানে গিয়ে তার মেয়েকে না পেয়ে আবদুল আলী স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেন ফারিয়া কোথায়? তখন কুলসুমা তাকে জানান, তাদের মেয়ে ফারিয়া জান্নাত অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য তাকে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। তখন আবদুল আলী তার সন্তান ফারিয়া জান্নাতকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ময়মনসিংহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (ট্রাইব্যুনাল) আদালতে একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর-১৫৯/২০২১, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ৬(১)(২)/৭/৩০।

পিবিআই জানায়, পিবিআইয়ের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায়, পিবিআই ময়মনসিংহের  ইউনিট ইনচার্জ ও পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসের সার্বিক সহযোগিতায়, পুলিশ পরিদর্শক (নি.) মো. দেলোয়ার হোসাইন মামলাটির তদন্ত করেন।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসের দিকনির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই শিশুটির অবস্থান শনাক্ত করেন। পরে রবিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানার কাঠগোলা এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেন।

এ ব্যাপারে ময়মনসিংহের পিবিআইয়ের এসপি গৌতম কুমার বিশ্বাস গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইকে দেওয়া হয়। পিবিআই ওই শিশুকে উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম নেয়। একপর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শিশুটিকে ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানার মো. স্বপন মিয়ার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।

পিবিআই জানায়, জানা যায়, আব্দুল আলী গত ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক রেজিস্ট্রি কাবিনমূলে মোছা. কুলসুমা বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে চার সন্তান ফারিব (১১), মরিয়ম (৮), তায়িব (৩) ও সাত মাস বয়সী ফারিয়া জান্নাতের জন্ম হয়। বিয়ের পর দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত পরিবারটির মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে তারা আলাদাভাবে বসবাস করতে শুরু করে। এছাড়াও তাদের চতুর্থ সন্তান ফারিয়া জান্নাত জন্ম নেওয়ার পর তাদের তৃতীয় পুত্র তায়িব খেলার ছলে বিভিন্ন সময় শিশু ফারিয়া জান্নাতকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরাসহ মাঝে মধ্যে মুখ ও গলায় চাপ দিত। এদিকে সংসারে আর্থিক অনটন থাকায় কুলসুমা বেগম বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ নেন। কুলসুমা অধিকাংশ সময় বাড়িতে না থাকার কারণে তার মধ্যে ফারিয়া জান্নাতের নিরাপত্তা নিয়ে এক ধরনের অজানা আশংকা কাজ করত। এ কারণে তিনি সন্তানের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তার সন্তানকে তার পরিচিত মো. স্বপন মিয়ার কাছে দিয়ে দেন। ওই ঘটনার বিষয়টি আব্দুল আলীকে অবগত না করায় তিনি তার স্ত্রীসহ তার শ্বশুর ও শ্যালকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/এএ/জেবি)